অভিযানস্থল ঘিরে সতর্ক র্যাব-পুলিশ

মৌলভীবাজারে জঙ্গি সন্দেহে ঘিরে রাখা আস্তানার অভিযানস্থলে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও এসেছেন। জঙ্গি আস্তানা হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর থেকেই সেখানে মৌলভীবাজার পুলিশের পাশাপাশি আছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটও। দুটি বাড়ি ঘিরে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে শহরের বড়হাট ও সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজারের কাছে ফতেহপুর গ্রামের ওই দুটি জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। বড়হাটের আস্তানাটি একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে, আর ফতেহপুরের আস্তানাটি একটি একতলা বাড়িতে। দুটি বাড়িই লন্ডন প্রবাসী সাইফুল রহমানের মালিকানাধীন।
তিনি জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় র্যাব-৯ এর বিপুলসংখ্যক সদস্য। যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসও। আগে থেকেই বাড়ি দু’টির আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। ভোরে অভিযান শুরু করলে জঙ্গিরা গুলি করতে থাকে। সকালে একের পর এক গ্রেনেড ছুড়ে মারে তারা। তবে এখন পর্যন্ত কারো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহল বাড়িটি গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরদিন শুক্রবার দিনভর দফায় দফায় পুলিশের ফাঁকা গুলি ও বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণের শব্দ গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। বিকেলে ঢাকা থেকে সিলেটে পৌঁছায় সোয়াট টিমের সদস্যরা। তারা জঙ্গি আস্তানা রেকি করে ভেতরে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে বলে ধারণা করেন। ওই দিন রাত ৮টায় সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশ, র্যাব কিংবা সোয়াট নয়, অভিযান চালাবে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা। এরপর শনিবার সকাল থেকে আতিয়া মহলে জিম্মি ৭৮ জনকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ইউনিট। দুপুর ২টা থেকে অ্যাকশনে যায় ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ সদস্যরা। সন্ধ্যায় দিনভর অভিযানে ব্যাপারে প্রেস ব্রিফিং করে সেনাবাহিনী। ওই প্রেস ব্রিফিং শেষে ফেরার পথে গোটাটিকর পাঠানপাড়া মাদ্রাসার সামনে ও জৈনপুর রাস্তার মুখে দু’দফা বিস্ফোরণে ২ পুলিশ কর্মকর্তা, ছাত্রলীগের ২ কর্মীসহ ৬ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন ইন্সপেক্টর আবু কয়ছর, ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম অপু, ছাত্রলীগ কর্মী জান্নাতুল ফাহিম, ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ও মাসুক মিয়া। আহত হন দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি, র্যাবের গোয়েন্দা প্রধানসহ ৪৫ জন। আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নারীসহ চার জঙ্গি নিহত হয়।
মন্তব্য চালু নেই