‘অবরুদ্ধ’ খালেদা-ফখরুল ॥ মাঠে নেই বিএনপি

দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দুজনই অবরুদ্ধ। খালেদা জিয়া তার গুলশান কার্যালয়ে আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে। তাদের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের যেন কোনো ভাবনাই নেই। রাজধানীতে কোথাও অবরোধের সমর্থনে বিএনপির কোনো তৎপরতা মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারটা পর্যন্ত চোখে পড়েনি। অন্যদিকে ১৬টি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে মাঠ দখল করে আছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই চলছে আওয়ামী লীগের মিছিল-সমাবেশ।

সোমবার একতরফা নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ঘোষণা করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল। অন্যদিকে এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ দাবি করে মাঠে থাকার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রাজধানীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

৫ জানয়ারি ঘোষিত ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসে’ বিএনপি রাজধানীতে আশানুরূপ শক্তি প্রদর্শন করতে পারেনি বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পুরো নগরীই ছিল আওয়ামী লীগের দখলে। কোথাও বিএনপি-ছাত্রদল মিছিল বের করার চেষ্টা করলেও পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। ‘তেমন কিছু’ করতে না পারায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নেমে আসে হতাশা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আগামীতে বিএনপির আন্দোলন জোরদার করার জন্য ৫ জানুয়ারি বড়ধরনের শক্তির প্রদর্শন করা জরুরি ছিল। কিন্তু রাজধানীতে বিএনপি সেটা পারেনি। এর কারণ হিসেবে দলের কমিটি না থাকাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ৫ জানুয়ারি বিএনপি ‘কিছু’ করতে না পারায় সরকারি দল আওয়ামী লীগে আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তাদের ধারণা, সামনে সরকার আরো বেশি নিপীড়ন চালাবে বিরোধীদের ওপর।

কর্মসূচি করতে না দেয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ঘোষণা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে সামনে দুই দফায় ইজতেমা থাকায় অবরোধ স্থায়ী হবে না বলে জানা গেছে। এই আন্দোলনে ভাটা পড়ে গেলে নতুন করে আন্দোলন গড়ে তোলা সহজ হবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিএনপি আন্দোলন কেন জমাতে পারছে না সে সম্পর্ক দলের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর অব. আখতারুজ্জামান বলেন, “হরতাল, সন্ত্রাস, বোমাবাজির কোনো প্রয়োজন নেই। এই মুহূর্তে বিএনপির শুধু প্রয়োজন জেলে যেতে প্রস্তুত সাহসী নির্ভীক কর্মীর। আমরা ফেসবুকে অনেক হাতি ঘোড়া মারতে পারি। অসভ্যের মতো গালাগালি করতে পারি। কিন্তু কাজের বেলায় নির্লজ্জ কাপুরুষ।”

তিনি বলেন, “সত্যি কথা বলতে কী বিএনপি বর্তমান অবস্থা মোকাবেলা করার জন্য ঠিকভাবে সংঘটিত নয়। বিএনপি এখন রাজনৈতিক নেতাভিত্তিক দল নয়। দল হয়ে গেছে এখন সম্পূর্ণ এমপি প্রত্যাশী, সুবিধাবাদী, ক্ষমতাশ্রয়ী চাটুকারদের দল। এই দলে শুধু নেতা নয় কর্মী হতেও টাকা লাগে।”



মন্তব্য চালু নেই