অপেক্ষায় ছিল আ’ লীগ, ডাকেননি আইভী!

মনোনয়ন দাখিলের পর এবার প্রতীক বরাদ্দ নেয়ার সময়ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর সঙ্গে দেখা মিললো না শামীম ওসমান পন্থী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের। তবে না থাকার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা অপেক্ষায় থাকলেও আইভী ডাকেননি তাদের!

সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা: সেলিনা হায়াত আইভী রিটার্নিং অফিসারের নিকট থেকে ‘নৌকা’ প্রতীক নেন।

তখন তার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো নেতৃবৃন্দ। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ উৎসুক জনতার মাঝে বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

শামীম ওসমান আর আইভীর মধ্যকার দ্বন্দ নিরসন করে যেখানে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে শামীম ওসমান পন্থী নেতাদের আইভীর পাশে দেখতে না পাওয়ায় বেশ আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে তৃণমূলে। পাশাপাশি জনসাধারনের মনেও নানা প্রশ্নের উদ্রেগ হয়েছে, তবে কি শামীম ওসমান নৌকার পক্ষে থাকছেন না। নাকি আইভী প্রয়াত শামসুজ্জোহাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় শামীম ওসমান ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন? তাহলে উভয়ের মধ্যে চলমান অর্ন্তদ্বন্দের নিরসন বাস্তবে হয়নি? নাকি আইভী মুখে বললেও বাস্তবে চাচ্ছেন না শামীম ওসমান পন্থীরা তার পক্ষে কাজ করুক?

যদিও সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সিটি নির্বাচনের কৌশল নির্ধারনী বৈঠকে আইভী বলেছিলেন, ‘শামীম ওসমান তার পক্ষে থাকলে ভালো, না থাকলে আরো ভালো।’

কেননা, গত ২৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র দাখিলের পূর্বে সাংসদ শামীম ওসমান আইভীকে দু’টি এসএমএস করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আইভী আপনি কখন মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে যাবেন। আমাকে জানাবেন, যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করবো।’

কিন্তু আইভী আর শামীম ওসমানের সেই এসএমএস’র কোনো প্রতিউত্তর তখন দেননি। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জ এসে স্থানীয় নেতাদের সাথে বৈঠক করে নৌকার পক্ষে একসাথে কাজ করার আহবান জানিয়েছিলেন।

সেদিন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চন্দন শীলও বলেছিলেন, শামীম ওসমান, আব্দুল হাই ও আনোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে আগামী ২২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে তারা নৌকা উপহার দিবেন।

তবে ‘নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগে কোনো ভেদাভেদ নেই। তৃণমূলসহ মহানগরের সবাই ঐক্যবদ্ধ আছেন। সবাই নৌকার পক্ষেই কাজ করবেন’ এমনটাই আইভী দাবী করে আসলেও বাস্তবে এখনো আইভীর পক্ষে শামীম ওসমান পন্থী কাউকেই মাঠে নামতে দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চন্দন শীল জানান, আমরা নৌকার পক্ষেই আছি, দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে সর্বাত্মক কাজ করে যাব।

সাধারন সম্পাদক খোকন সাহা বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় ছিলাম প্রতীক নেয়ার সময় হয়তো বা আইভী আমাদের ডাকবেন। কিন্তু তিনি আমাকে ডাকেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেউ ডাকুক আর নাই ডাকুক, আর প্রার্থী যেই হউক না কেন, আমরা দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক নৌকার পক্ষেই কাজ করবো।’

মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদের আইভী কেন ডাকেনি এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আইভী কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি জানান, দলের সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচনি প্রচারনায় অংশ নিচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই