অপূর্ব নির্মাণ শৈলীর বিশ্বের বৃহৎ মাটির মসজিদ
মুসলমানদের কাছে মসজিদ মানে হল সৃষ্টিকর্তার ঘর। শুধু নামাজ নয়, ইসলামী শাসনামলে মসজিদ থেকেই চালিত হত রাষ্ট্রের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড। ইসলামের বিস্তৃতির সঙ্গে পৃথিবীতে নির্মিত হয়েছে বহু মসজিদ। বেড়েছে এর পরিধিও। এ ছাড়া একেক দেশের একেক রকমের সংস্কৃতির ছাপ পৃথিবীর একাধিক মসজিদের নির্মাণশৈলীতে ঠায় পেয়েছে।
পৃথিবীর সেরা মসজিদগুলোর নির্মাণশৈলী এবং ইতিহাস নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। এমন অনেক মসজিদের মধ্যে মাটি দিয়ে তৈরি মসজিদও আছে। পৃথিবীতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মাটির মসজিদটি অবস্থিত আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলে ডিজেনি শহরে। এই বড় মাটির মসজিদটির নাম ‘গ্র্যান্ড মস্ক অব ডিজেনি’। আর এটিই হল এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে মাটির তৈরি সবচেয়ে বড় মসজিদ।
মসজিদটি প্রথম কবে নির্মাণ করা হয়েছিল সে তথ্য জানা না গেলেও ধারণা করা হয়, ১২শ’ শতাব্দি হতে ১৩শ’ শতাব্দির মাঝামাঝিতে এই মসজিদটি নির্মাণ হয়েছিল। শোনা যায় যে, সুলতান কুনবুরু (Kunburu) ধর্মান্তরিত হন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর, তার প্রাসাদটি ভেঙ্গে সেখানে এই মাটির মসজিদটি নির্মাণ করেন।
ফরাসী এক পর্যটক রেনে ১৮২৮ সালে এই এলাকা সফরের আগ পর্যন্ত এই মসজিদটি সম্পর্কে লিখিত কোন তথ্যই ছিলনা। রেনে তার সফরশেষে লিখেগিয়েছেন, ডিজেনি শহরে মাটির তৈরি একটি মসজিদ রয়েছে। এর দুইপাশে দুটি দর্শনীয় কম উচ্চতার টাওয়ার রয়েছে। শোনা যায়, এরপর থেকেই মূলত এই মাটির তৈরি এই মসজিদ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
মসজিদটি ২৪৫ ফুট আয়তনবিশিষ্ট, ৩ ফুট উঁচু ফ্ল্যাটফরমের উপর তৈরি করা হয়েছে। বানি নদীর তীরে এই মসজিদটি অবস্থিত। বর্ষাকালে বানি নদীর প্লাবিত পানি হতে মসজিদটিকে সুরক্ষা করে থাকে এই ফ্ল্যাটফরম। মসজিদের দেয়ালগুলো তাল গাছের কাঠ, যা স্থানীয়ভাবে টরল নামে পরিচিত। সেগুলো দিয়েই মূলত নকশা তৈরি করা হয়েছে। শুধু নকশাই নয়, তাল গাছের কাঠ মসজিদের দেওয়ালে এমনভাবে গেঁথে দেওয়া হয়েছে যাতে করে মাটির দেওয়াল সহজে ধ্বসে না যায়। প্রতি বছর স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের উদ্যোগে এই মসজিদটির সংস্কার কাজ করা হয়ে থাকে।
আপনি কখনও আফ্রিকা অঞ্চলে বেড়াতে গেলে আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলে ডিজেনি শহরে গিয়ে প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক বাহক ‘গ্র্যান্ড মস্ক অব ডিজেনি’ মসজিদটি দেখে আসবেন।
মন্তব্য চালু নেই