অধ্যাপকের ‘চিকিৎসায়’ সুস্থ আছে নর্দমা!
নর্দমা পরিষ্কার করছেন এক লোক। নর্দমায় আটকে থাকা আবর্জনা, পলিথিনসহ বিভিন্ন কিছুর কারণে এর পানির প্রবাহটা নিয়মিত থাকে না। তিনি ওই আবর্জনা পরিষ্কার করে নর্দমার প্রাণ ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
নর্দমার পাশ দিয়ে চলছে মানুষ, চলছে যানবাহন। কোনো দিকে দৃষ্টি নেই তাঁর। মানুষ মাঝে মাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে। কেননা মানুষটা পেশায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী নন। তাঁর নাম কাজল কান্তি। ময়মনসিংহ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ (সিবিএমসি) হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগের প্রধান। তিনি একজন অধ্যাপক।
সময় ও সুযোগ পেলে হাতে কিছু একটা নিয়ে বেরিয়ে আসেন বাসার বাইরে। নর্দমার আবর্জনা পরিষ্কার করছেন।
কথা হলো অধ্যাপক কাজল কান্তির সঙ্গে। কেন করছেন এ কাজ? শখ? নাকি অন্য কারণে?
শান্ত কণ্ঠে কাজল কান্তি বলেন, ‘এ কিছু না। এটা নিয়ে লেখালেখির দরকার নেই। সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে করি আর কী। বাসার সাথেই নর্দমায় যখন পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, তখন দুর্গন্ধ হয়, নোংরা হয়ে থাকে। নর্দমায় পলিথিন, ভাত, ময়লা এগুলো ফালায় মানুষ। তখন মাঝেমধ্যে সেগুলো তুলে ফেলি যাতে পানি চলাচল স্বাভাবিক থাকে এই আর কি? দিনে রাতে যখনই সুযোগ পাই, অবসর থাকে তখন মাঝেমধ্যে একটু করি, উপভোগ করি, আনন্দ পাই ।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক বছর ধরে অধ্যাপক কাজল প্রায় প্রতি রাতে পলিটেকনিক মোড় থেকে বিসিকের মোড় পর্যন্ত পুরো নর্দমা পরিষ্কার করেন।
বৃহস্পতিবারে দিনের বেলায় নর্দমা পরিষ্কার করছিলেন ডা. কাজল। এ সময় ছবি তুলে ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন জিয়া চৌধুরী নামের একজন।
কাজল কান্তির পুরো পরিবার চিকিৎসক। তাঁর কর্মস্থল ময়মনসিংহ সিবিএমসিতেই তাঁর স্ত্রী চিকিৎসক। কাজল কান্তির দুই ছেলের একজন মা ও বাবার সঙ্গে ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন। অন্য ছেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত।
মন্তব্য চালু নেই