অতি পরিচিত ঘোড়ার অবাক করা কিছু তথ্য
হাজার হাজার বছর যাবত ঘোড়া মানুষের সঙ্গী হয়ে আছে। ঘোড়াকে সম্ভ্রান্ত জীব বলা হয়ে থাকে। ৪০০০-২০০০ খ্রিষ্টপূর্ব থেকেই ঘোড়া মানুষের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। যেকোন স্থানে পৌঁছে দিতে ঘোড়া মানুষের সহযোগিতা করে আসছে এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রেও। এই একবিংশ শতাব্দীতেও ঘোড়ার কদর কমে যায়নি। তাই চলুন আজ ঘোড়ার কিছু বিস্ময়কর তথ্য জেনে নিই।
– স্থলজ যেকোন স্তন্যপায়ীর চেয়ে ঘোড়ার চোখ বড় হয়।
– জন্মের একঘন্টা পরই ঘোড়া দৌড়াতে পারে।
– কোন গন্ধ ভালো না খারাপ তা বোঝার জন্য ঘোড়া তার নাককে বর্ধিত করার একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে যাকে “ফ্লিমেন” বলে। এটি করার সময় ঘোড়াকে দেখে মনে হয় ঘোড়া হাসছে।
– এক সময় মনে করা হত ঘোড়া বর্ণান্ধ। কিন্তু আসলে এটি ঠিক নয়। তারা রক্তবর্ণ বা বেগুনী বর্ণের চেয়ে হলুদ বা সবুজ রঙ ভালো দেখে।
– ঘোড়ার দাঁত দেখেই স্ত্রী ও পুরুষ ঘোড়া শনাক্ত করা যায়। পুরুষ ঘোড়ার ৪০টি দাঁত থাকে এবং স্ত্রী ঘোড়ার থাকে ৩৬টি।
– মানুষের চুল ও নখ যে প্রকারের প্রোটিন দিয়ে গঠিত ঘোড়ার খুরও একই ধরণের প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
– যুক্তরাজ্যের লর্ড জর্জ বেন্টিঙ্ক নামক এক ব্যাক্তি তার ৬টি ঘোড়াকে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথম “দ্যা হর্স ট্রেইলার” বা “হর্স বক্স” উদ্ভাবন করেন।
– ঘোড়া দাঁড়িয়ে ও শুয়ে উভয়ভাবেই ঘুমাতে পারে।
– ঘোড়ার চোখগুলো মাথার দুইপাশে অবস্থিত বলে ঘোড়া ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত দেখতে পায়।
– সত্যিকারের বুনো ঘোড়ার প্রজাতি প্রিজওয়ালস্কির অস্তিত্ব এখনো আছে। মঙ্গোলিয়াতে পাওয়া যায় এদের। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বন্য ঘোড়া পাওয়া যায় যেমন- মাসটাং পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকায়।
– ঘোড়া তার মেজাজ প্রকাশের জন্য নাক, কান ও চোখ ব্যবহার করে। মুখের অভিব্যক্তির মাধ্যমে তারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে।
– অনেকগুলো ঘোড়া একসাথে কখনোই শুয়ে থাকেনা। অন্তত একজন সজাগ থাকবে তার সঙ্গীদের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য।
– একটি পূর্ণবয়স্ক ঘোড়ার মস্তিস্কের ওজন ২২ আউন্স হয়।
– বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ঘোড়ার সম্মানজনক অবস্থান আছে। যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ কীর্তিকলাপের সাথে সম্পৃক্ত আছে ঘোড়া বিশেষ করে চীন দেশে।
– ঘোড়া বমি করতে পারেনা। কারণ তাদের খাদ্যনালীর স্ফিংক্টার অন্য যেকোন প্রাণীর চেয়ে অধিক শক্তিশালী থাকে।
– গৃহপালিত ঘোড়ার একটি প্রজাতিই আছে। কিন্তু ৪০০ বিভিন্ন প্রজাতির ঘোড়া আছে যারা গাড়ীটানা থেকে শুরু করে রেসিং পর্যন্ত সব কাজে লাগে।
– ঘোড়া রাতে মানুষের চেয়ে ভালো দেখে। তবে আলো থেকে অন্ধকারে বা অন্ধকার থেকে আলোতে অ্যাডজাস্ট করতে মানুষের চেয়ে ঘোড়ার বেশি সময় লাগে।
– ঘোড়া মিষ্টি স্বাদ পছন্দ করে এবং টক বা তিক্তস্বাদ প্রত্যাখ্যান করে।
– বন্য ঘোড়ারা সাধারণত ৩-২০টির দল করে থাকে। এই দলের নেতৃত্ব দেয় একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ঘোড়া যাকে স্ট্যালিয়ন বলে। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ঘোড়াকে মেয়ার বলে। তরুণ পুরুষ ঘোড়াকে কোল্ট বলে এবং তরুণ স্ত্রী ঘোড়াকে ফিলি বলে।
– ঘোড়া একদিনে প্রায় ১০ গ্যালন লালা উৎপাদন করে।
– ঘোড়ার খুরের নীচের দিকে একটি ত্রিকোণাকার অংশ থাকে যাকে ফ্রগ বলে। এটি ঘাতশোষক হিসেবে কাজ করে এবং রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করে।
ঘোড়ার উচ্চতা মাপার একককে হ্যান্ডস বলে। এক হ্যান্ডস সমান ৪ ইঞ্চি।সবচেয়ে দীর্ঘ ঘোড়ার দৈর্ঘ্য ছিল ২১.২ হ্যান্ডস (৭ফুট, ২ইঞ্চি)।
– ঘোড়ার হৃদপিণ্ডের ওজন ৯/১০ পাউন্ড।
– বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন ঘোড়ার প্রথম পূর্বপুরুষ ৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে বেঁচে ছিলো। এই প্রাগৈতিহাসিক ঘোড়াকে ইয়োহিপ্পাস বলে। এদের সামনের পায়ে ৪টি করে প্যাড যুক্ত আঙ্গুল ছিল এবং পেছনের পায়ে তিনটি প্যাড যুক্ত আঙ্গুল ছিলো।
– ঘোড়া দৈনিক ২৫ গ্যালন পানি পান করে। গরমের সময় আরো বেশি পান করে।
– ঘোড়ার খুর পুনরায় সম্পূর্ণ রূপে জন্মাতে ৯-১২ মাস সময় লাগে।
– ঘোড়ার প্রতিটা কানে ১৬টি মাংসপেশি থাকে, যার ফলে তারা কানকে ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত ঘুরাতে পারে।
– যে ঘোড়ার লেজে লাল রিবন থাকে সেই ঘোড়া লাথি মারে।
– ঘোড়া সামাজিক প্রাণী তাই একা থাকলে নিঃসঙ্গ অনুভব করে এবং সঙ্গীর মৃত্যুতে শোকগ্রস্থ হয়।
– ২০১০ সালের এক গবেষণায় জানা যায় যে, ঘোড়া বুদ্ধিমান প্রাণী। বিশেষ করে স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে। ঘোড়ার সাথে সদয় আচরণ করলে ঘোড়া তা আজীবন মনে রাখে এবং তাকে বন্ধু ভাবে। তারা স্থান চিহ্নিত করতে পারে।
– অ্যারাবিয়ান ঘোড়াকেই সবচেয়ে সুন্দর ঘোড়া বলা হয়।
মন্তব্য চালু নেই