অতএব, যুবকরা সাবধান!
কয়েকদিন আগের ঘটনা। তখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা। শ্যামলী শিশুমেলার সামনে অফিস ফেরত এক যুবককে বাস থেকে টেনে হিঁচড়ে নামালেন পড়ন্ত বয়সের চার মহিলা। তাদের অভিযোগ, যুবকটি নাকি তাদের একজনের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। শুধু তাই নয়, বাসের ভেতরেই নাকি ওই নারীকে কু-প্রস্তাবও দিয়েছেন কথিত অভিযুক্ত যুবকটি। কী সাংঘাতিক কথা!
সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে তথ্যটি এসেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও চিত্রগ্রাহক সমাজ সচেতন এক ভদ্রলোক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এটি আপলোড করেছেন। পাশাপাশি, একটি অনুরোধও জানিয়েছেন এভাবে: ‘আমার ফ্রে-লিষ্টে কোন সাংবাদিক বন্ধু থাকলে জনসচেতনতার স্বার্থে এটি নিউজ করতে পারেন।’
ফেরা যাক প্রসঙ্গে। কথিত অশোভন আচরণকারী যুবককে বাস থেকে নামানোর পর, বাসটি পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সংঘবদ্ধ ওই নারীচক্রের গলার আওয়াজ আরও চড়ে যায়! ‘ইভটিজার’ বলে চিৎকার করে লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি তারা ওই যুবকের শার্টের কলার ধরে টানা-হেঁচড়া শুরু করেন। এ সময় চিৎকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে থাকেন অসহায় যুবকটি। কিন্তু কে শোনে কার কথা? কৌশলী আচরণে ঘটনাপ্রবাহকে ততক্ষণে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে ফেলেছেন ধূর্ত ওই চক্রটি।
নারীর সম্মান বলে কথা! ঘুণে ধরা আমাদের এই নষ্ট-দুষ্টু সমাজে এখনো এমন বেয়াদবের সংখ্যা অনেক আছে, যারা কন্যা-জায়া-জননীকে সম্মান করে না-একথা সত্যি। আর এ কারণেই কেউ কিছু না বুঝে সেদিনের সৃষ্ট জটলা থেকে ‘ধর-মার-সাইজ কর’ আওয়াজ উঠতে থাকে।
এ অবস্থায় ঘটনাটির ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলেন ভদ্রলোক। তিনি ছবি তোলার পাশাপাশি ঘটনাটিও আরো তীক্ষ্ণভাবে দেখছিলেন। সংযুক্ত ছবিগুলো দেখে আশাকরি পাঠকরাও এ ব্যাপারে একমত হবেন। কিন্তু ওই নারীদের আচরণ সন্দেহ হলে তিনি তাদের পরিচয় জানতে চান। জবাবে অনেক অসংলগ্ন কথার পাশাপাশি- নিজেদের সরকারী দলের নেতা-কর্মী বলে পরিচয় দেন মধ্য বয়সী মহিলারা। এতে সন্দেহ জাগে উত্তেজিত জনতার মধ্যে। এ অবস্থায় চিত্রগ্রাহক ভদ্রলোক উভয়পক্ষকে পুলিশে দেওয়ার প্রস্তাব করলে পাল্টে যায় দৃশ্যপট। চোখের পলকে কেটে পড়েন ওই নারীকুল।
এরপর সবার কাছে ঘটনাটি স্পষ্ট হয়ে যায়। উপস্থিত জনতা বুঝে যায়, এটি একটি নতুন চক্র। দল বেধে নগর পরিবহণের বাসে চেপে শিকার খোঁজে এরা। পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে পকেটের অবস্থা বোঝার চেষ্টা ক’রে তারা। শিকার টার্গেট করে এভাবে ট্রাপে ফেলে। তারপর, মিথ্যে অভিযোগ তুলে ‘নারীবাদী সেন্টিমেন্ট’কে কাজে লাগিয়ে শিকারের পকেট কাটে চক্রটি।
মন্তব্য চালু নেই