অজান্তেই প্রিয় বন্ধুটি আপনার ক্ষতি করছেন না তো?
বন্ধুত্বের গায়ে কোথাও একটা জুড়ে থাকে বিশ্বাস শব্দটাও। যাকে বিশ্বাসই করা যায় না, সে আবার বন্ধু হয় কী করে? বিশেষ করে, প্রিয় বন্ধুকে অবিশ্বাস করার কথা তো কেউই ভাবতে পারেন না!
মুশকিল হল, আপনি না-হয় অন্ধের মতনই বিশ্বাস করেন প্রিয় বন্ধুকে। কিন্তু, তিনি আদৌ আপনার বিশ্বাসের যোগ্য তো? আপনার যা যা ক্ষতি হচ্ছে, তার পিছনে আপনার প্রিয় বন্ধুরই হাত নেই তো?
জীবন মাঝে মাঝে আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয় এমন দ্বিধার মধ্যে। আমরা সবাই অল্প-বিস্তর অন্য মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকি! যাতে জীবনভর এই ঠকার পালা না চলে, সে জন্য এক এক করে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো! বেশি কিছু নয়, স্রেফ প্রশ্ন পিছু বেছে নিন ক/খ- যে কোনও একটা সম্ভাবনা।
১. আপনি পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়েছেন আপনার প্রিয় বন্ধুর থেকে। তিনি কোনও মতে পাশ করে মুখরক্ষা করতে পেরেছেন বাড়ির কাছে। পরের পরীক্ষার সময় এসেছে। আপনি নার্ভাস হয়ে রয়েছেন কোনও কারণে। আপনার প্রিয় বন্ধু তখন কী করেন?
ক. আপনাকে উৎসাহ দেন। নানা উদাহরণ দিয়ে দেখিয়ে দেন, আপনার ঘাবড়াবার কোনও কারণ নেই।
খ. পরীক্ষাটা চাপের হতে পারে, তাঁর নিজেরও খুব ভয় করছে, পড়তে ইচ্ছে করছে না- এরকম সব কথা বলে আপনাকে আরও ঘেঁটে দেন।
২. আপনার সঙ্গে খারাপ কিছু একটা হল। আপনি সে কথা বললেন আপনার প্রিয় বন্ধুকে। তার পরে কোনও
একদিন বন্ধুদের জমায়েতে শোনা গেল, অন্য একজনের সঙ্গেও সেরকম এক ঘটনা ঘটেছে। তখন আপনার বন্ধু-
ক. চুপ করে থাকেন। আপনার গোপন কথা নিয়ে মুখ খোলেন না।
খ. আপনার সঙ্গে যা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ তোলেন। বলে দেন সবটা! ভাবেন, কেস স্টাডি হিসেবে কথাগুলো বলাই যায়! তাহলে সবারই ভাল হবে!
৩. আপনি অনেক দিন ধরে ওজন কমাতে চাইছেন। ব্যায়াম করছেন, কিন্তু লাভ কিছুই হচ্ছে না। এ সব ক্ষেত্রে আপনার বন্ধু-
ক. যত পারেন, আপনাকে উৎসাহ দেন। বোঝান, খাওয়ার সঙ্গে ওজন বেড়ে চলার সম্পর্ক খুবই আলগা! এও বোঝান, আপনি মোটা বলে মন খারাপ করার কিছু নেই। এবং, শেষ পর্যন্ত আপনাকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দেন জিমের দিকে।
খ. আপনার খাওয়া নিয়ে বিদ্রুপ করেন! বলেন, এরকম ভাবে খেয়ে গেলে কখনই ওজন কমানো যাবে না। পাশাপাশি, মাঝে-মাঝেই মোটা বলে আপনাকে খোঁটা দেন!
৪. আপনার প্রিয় বন্ধু কি বেশির ভাগ সময়েই আপনাকে নিরুৎসাহিত করেন? আপনার মন খারাপ হলে তা দূর করার চেষ্টা করেন না? বলেন, পুরোটাই আপনার দোষ?
ক. না, আমার প্রিয় বন্ধু কখনই এরকম করেন না।
খ. হ্যাঁ, বেশির ভাগ সময় এমনটাই হয় বটে!
৫. আপনি কি আপনার প্রিয় বন্ধুর সাহচর্য উপভোগ করেন? না কি সুযোগ পেলেই তিনি যত ভাবে পারেন, অন্যদের সামনে ছোট করেন আপনাকে?
ক. নিশ্চয়ই! আমি আমার প্রিয় বন্ধুকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবতেই পারি না।
খ. মাঝে মাঝে মনে হয় বটে- প্রিয় বন্ধু হলেও সে আমার সঙ্গে ঠিকঠাক ব্যবহার করে না। তার মন্তব্যে আমার নিজেকে নিয়ে খারাপ ধারণা বাড়ে বই কমে না!
৬. আপনার বন্ধু কি কখনও আপনার বিশ্বাস ভেঙেছেন? এবং, তার পরেও তিনি এতটুকুও লজ্জিত নন?
ক. না, এরকমটা কখনই হয়নি।
খ. হ্যাঁ, এরকমটা আমার সঙ্গে হয়েছে। মাঝে মাঝেই হয়ে থাকে।
প্রশ্নগুলোর উত্তর হতে পারে চার রকম- হয় সবকটাই ক, নয় সবকটাই খ! অথবা, ক-এর ভাগটাই বেশি। বা খ-এর সংখ্যা ছাপিয়ে গেল ক-কে।
মোদ্দা কথা, পাল্লা যদি ক-এর ঘরে হেলে থাকে, বুঝতেই পারছেন, আপনি সঠিক বন্ধু নির্বাচন করেছেন। আপনি যাঁকে প্রিয় বন্ধু বলে দাবি করছেন, তিনি সত্যিই সেই সম্মানের যোগ্য। তিনি সব সময় আপনার পাশে থাকবেন। আপনাকে কখনই ছেড়ে যাবেন না।
আর যদি খ-এর দিকটাই ভারি হয়?
তাহলে সতর্ক হন! এখনই! যাকে আপনি প্রিয় বন্ধু ভাবছেন, তিনি আপনার বন্ধু হওয়ার যোগ্যই নন। আদতে তিনি আপনাকে হিংসে করেন। তাই সব সময় চেষ্টা করেন আপনাকে খাটো করতে। একটু তলিয়ে ভাবুন, দেখবেন, আপনার অনেক ক্ষতির পিছনেই হাত রয়েছে এই তথাকথিত প্রিয় বন্ধুর!
তবে হ্যাঁ, উত্তরগুলো যদি খ-র ঘরে হয়, তবে মন খারাপ করবেন না। বরং, ভুল থেকে শিক্ষা নিন। ভুল সবারই হয়। তাতে দোষের কিছু নেই।
পরের বারে আর বন্ধু বাছতে ভুল না হলেই হল! -সংবাদ প্রতিদিন
মন্তব্য চালু নেই