অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে বিল গেটসের ভবিষ্যদ্বাণী!

ভবিষ্যতের পৃথিবী কেমন হবে তা নিয়ে ১৯৯৯ সালে এসব ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিল গেটস। আজ থেকে ১৫ বছর আগে বিল গেটসের করা সেইসব ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেছে অক্ষরে অক্ষরে।

১. গেটস বলেছিলেন একটা সময় অাসবে যখন একই পণ্যের বিভিন্ন মূল্য থাকবে। মানুষ সহজেই সবচেয়ে কম মূল্যে সবচেয়ে ভালো পণ্যটা কিনতে পারবে।

এখন অ্যামাজন বা গুগলের মাধ্যমে একই পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ দেখতে পারি আমরা। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের পণ্য যাছাই-বাছাই করে সর্বোত্তম পণ্যটা কিনতে পারি আমরা।

২.মানুষের হাতে এমন সব ছোট ছোট ডিভাইস থাকবে যা নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাবে। যেমন সময়, প্রতিমুহূর্তের খবর, ফ্লাইট শিডিউল, ফ্লাইটটি দেখতে কেমন, জিনিসপত্রে দাম, শেয়ার বাজারের খবর ইত্যাদি সব জানা যাবে।

মানুষের হাতে এখন স্মার্টফোন বা স্মার্ট ওয়াচের মত ছোট ছোট ডিভাইস আছে যার সাহায্যে মানুষ এর চেয়েও বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারে।

৩.মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনেই লেনদেন করতে পারবে, নিজের ব্যবসার খোঁজ বা ডাক্তারের সাথে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা, সব হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

এখনকার দিনে অনলাইন লেনদেন তো অত্যন্ত জনপ্রিয়। বলা হচ্ছে এখন মূল ব্যাংকিংটাই হচ্ছে অনলাইনে। আর এ লেনদেন অনেক নিরাপদও। তবে ইন্টারনেট এখনো স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক অগ্রগতি আনতে না পারলেও জকডক’র এর মত সাইটগুলো এক্ষেত্রে ভালোই অবদান রাখছে।

৪.ব্যক্তিগত সহকারী হবে ইন্টারনেট। ধরুন আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, প্রতিমুহূর্তে আপনার প্রয়োজন পূরণ করবে ইন্টারনেট। এই মুহূর্তে আপনার কোন তথ্যটা জানা দরকার, আপনি বিমানবন্দরে যাবেন, রুট কী হবে, কোন গাড়িতে যাবেন, রাস্তার কী হালহকিকত, সম্পূর্ণ নতুন একটা দেশে অাসছেন, একজন গাইড দরকার? আপনার গাইড হবে ইন্টারনেট।

বিল গেটস এই যুগের গুগলের মত একটা প্রতিষ্ঠানের আঁচ তখনই করতে পেরেছিলেন। গুগলের মাধ্যমে আজ সব ধরনের সেবা পাওয়া সম্ভব। গুগলই আপনার সত্যিকারের সহকারী। একটা কথা প্রচলিত আছে, গুগলে যেটার অস্তিত্ব নেই, এই পৃথিবীতেই সেটার অস্তিত্ব নেই।

৫. এমন ধরনের প্রযুক্তি আসবে ভবিষ্যতে যা দিয়ে আপনি বাড়ির বাইরে থাকার সময়ে কে অাপনার দরজায় এসেছিলো তা দেখতে পারবেন।

ড্রপক্যাম নামের একটি প্রতিষ্ঠান এখন ঠিক এ কাজটিই করে। ২০১৪ সালে এ প্রতিষ্ঠানটিকে ৫৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেয় গুগল।

৬. ব্যক্তিগত কাজে আপনি এখন যেসব ওয়েবসাইট ব্যাবহার করছেন একসময় সেটা পাবলিক হয়ে যাবে। নাম হবে সোশ্যাল মিডিয়া। এখানে বসেই আপনি বন্ধুবান্ধবের সাথে কথা বলতে পারবেন, নিজের ব্যবসা পরিকল্পনা করতে পারবেন।

ফেসবুক, টুইটারের মত সোশ্যাল মিডিয়াগুলো এখন তুমুল জনপ্রিয়। এসব মাধ্যমে মানুষ সহজেই নতুন নতুন মানুষের সংস্পর্শে আসতে পারছে। নুতন নতুন বিষয়ে জানছে। এখানে নানা বিষয় নিয়ে অালোচনা হয়। সমস্যা আর সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক ব্যবসাও গড়ে উঠছে এখন।

৭. এমন সফটওয়্যার থাকবে যা আপনার যাত্রার সময় মনে করিয়ে দেবে। যে জায়গায় যাবেন সেখানে কোন কোন জিনিস অাপনার কাজে লাগতে পারে তা সুলভ মূল্যে কেনার জন্য আপনাকে অফার করবে।

এক্সপেডিয়া বা কায়াকের মত ট্রাভেল সাইটগুলো এখন এই ধরনের কাজ করে। আবার গুগুল বা ফেসবুকেও যেসব প্রমোশনাল বিজ্ঞাপন থাকে, সেখানেও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের জন্য নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকে।

৮. খেলা চলাকালিন খেলার বিভিন্ন আপডেট, বিশ্লেষণ, রেকর্ড, দর্শকের ধারণায় বিজয়ী দল, খেলার প্রতিমুহূর্তের ছবি ইত্যাদি দেখা যাবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।

এখন তো এই ধরনের বহু ওয়েবসাইট আছে যারা প্রতিমুহূর্তের ছবিসহ বিশ্লেষণ করে, রেকর্ড বলে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইএসপিএন এক্ষেত্রে সবার প্রথমে। আর সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর মধ্যে এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে টুইটার।

৯. থাকবে অনলাইনে মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা। কমিউনিটি ভিত্তিক ব্লগ থাকবে যেখানে সেই কমিউনিটির যাবতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবে বাসিন্দারা। কিভাবে সমাধান বের করা সম্ভব। এছাড়া যেকোন খবর সম্পর্কে পাঠক তার মতামত ব্যক্ত করতে পারবে।

এখনতো প্রত্যেকটি নিউজ পোর্টালে কমেন্ট সেকশন আছে যেখানে পাঠক তার মন্তব্য জানাতে পারে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় কমিউনিটি ভিত্তিক আলাদা আলাদা গ্রুপ আছে যেখানে কমিউনিটির যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

১০. চাকরী করা যাবে অনলাইনেই। মানুষ তার পছন্দ, যোগ্যতা এবং দক্ষতা অনুসারে অনলাইনেই কাজ করতেই পারবে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় অফিস করতে হবে, এ ধারনা থাকবে না।

ইন্টারনেট এখন সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস। যেকোন কিছুর জন্যেই। চাকরির বেলাতেও। লিংকড ইন এখন চাকরি খুঁজে পাওয়ার বা চাকরি দেয়ার সাইটে পরিণত হয়েছে। মানুষ তার যোগ্যতা, শিক্ষা ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য লিংকড ইনে আপলোড করে। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান এখান থেকে তোদের চাহিদা অনুসারে কর্মী নিয়োগ দেয়।



মন্তব্য চালু নেই