সেলফি তুলতে গিয়ে যেভাবে নিজের জীবন বিপন্ন করল তরুনী ( ভিডিও )

নিজস্বী বা সেলফি (সেল্ফি) হলো আত্ম প্রতিকৃতি আলোকচিত্র, যা সাধারণত হাতে-ধরা ডিজিটাল ক্যামেরা বা ক্যামেরা ফোন ব্যবহার করে নেয়া হয়। বর্তমানে অত্যন্ত পরিচিত একটা শব্দ। Selfie শব্দটি প্রথম এসেছে Selfish থেকে। ‍Selfie অর্থ হল প্রতিকৃতি। ‘সেলফি’কে অক্সফোর্ড অভিধানে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এভাবে, একটি ছবি (আলোকচিত্র) যা নিজেরই তোলা নিজের প্রতিকৃতি, সাধারণত স্মার্টফোন বা ওয়েবক্যামে ধারণ করা এবং যে কোনো সামাজিক মাধ্যমে আপলোড (তুলে দেয়া) করা।

স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট হাতে নিয়ে নিজেই নিজের ছবি তোলা—এই হলো সেলফি, এ যুগের জনপ্রিয় এক ধারা৷ ফেসবুক ভেসে যায় এই সেলফিতেই৷

সেলফির ইতিহাস খুব অদ্ভুত। যতদুর জানা যায় ইতিহাস এর প্রথম সেলফি তোলা হয়েছিলো ১৮৩৯ সালে। রবার্ট কর্ণিলিয়াস নামের একজন ফোটোগ্রাফার প্রথম সেলফি প্রকাশ করেন। ১৯০০ সালে Kodak Brownie box camera বাজারে আসার পর সেলফি তোলা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। বহনে সহজ এই ক্যামেরার সাহায্যে আয়নার মাধ্যমে সেলফি তোলার প্রচলন শুরু হয় তখন থকেই। তবে সেলফি শব্দটি প্রথম ব্যাবহৃত হয় ২০০২ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ান এক অনলাইন ফোরামে।

ফেসবুক এর আগের সময়টায় মাইস্পেস বেশ জনপ্রিয় ছিল। এবং সে কারনেই সেলফি সর্ব প্রথম জনপ্রিয়তা পায় সেখানেই। তারপর ফেসবুক জনপ্রিয় হওয়ার পর অনেক দিন পর্যন্ত সেলফি নিম্ন রুচির পরিচায়ক ছিল। [কারন তখন বেশিরভাগ সেলফি গুলো বাথরুমের আয়নার সামনে তোলা হত।] তবে শুরু থেকেই ইমেজ শেয়ারিং সাইট ফ্লিকার এ জনপ্রিয় ছিলো সেলফি। তবে তখনকার দিনের সব সেলফি গুলোই টিন এজ মেয়েরা আপলোড করত। প্রাথমিক অবস্থায় তরুণদের মধ্যে সেলফি অধিক জনপ্রিয়তা পেলেও বর্তমানে এটি সমাজের সকল স্তরে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ২০১২ সালের শেষের দিকে টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে ‘সেলফি’ শব্দটি বছরের আলোচিত সেরা দশ শব্দের অন্যতম শব্দ হিসাবে বিবেচিত হয়। ২০১৩ সালের জরিপ অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ান মহিলাদের দুই তৃতীয়াংশই (যাদের বয়স ১৮-৩৫) ফেসবুকে শেয়ারের উদ্দেশে সেলফি তুলেছেন। স্মার্টফোন এবং ক্যামেরা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এর জরিপ প্রতিবেদন বলছেঃ ১৮-২৪ বছর বয়েসি মানুষের তোলা ছবির ৩০% ই সেলফি। ২০১৩ সালে অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির অনলাইন ভার্সনে ‘সেলফি’ শব্দটি নতুন সংযোজিত হয়। স্মার্টফোনের কল্যানে গত এক বছরে বাংলাদেশ সহ সমগ্র বিশ্বে সেলফি তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

বর্তমানে সেলফি উভয় লিঙ্গের মানুষের মাঝেই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। অনেক সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে সেলফির উত্থান ঘটে মূলত ‘পর্ণ সংস্কৃতিতে’ ব্যাবহারের মাধ্যমে। নিজেদের শরীর সুন্দর ভাবে প্রদর্শনের মধ্যমে অন্যকে আকৃষ্ট করার জন্যই মহিলারা সেলফি তুলতো। নিজেকে আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করায় ছিল তখন সেলফির মূল উদ্দেশ্য। যত বেশি আকর্ষণীয় হবে সেই সেলফি তত বেশি উন্নত। তবে আকর্ষণী নয় এমন সেলফি ব্যাপকতা পায় ২০১০ সালের পরবর্তী সময়ে।

অনেক তরুন তরুনীর কাছে সেলফি এখন নেশার মত হয়ে গেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা তাদের প্রতিটি মূহুর্ত তারা সেলফিবন্দি করে রাখতে চায়। কিন্তু কোন কিছুরই অতিরিক্ত ভাল না। ভিডিওতে দেখুন এক তরুনী সেলফি তুলতে গিয়ে কিভাবে বিপদে পড়ে নিজের জীবনটাকেই বিপন্ন করে তুলেছিল।



মন্তব্য চালু নেই