সুশীল সমাজ পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসীদের সাহায্য করছে : জয়

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগ করেছেন, অবরোধ-হরতালের নামে চলা সহিংসতা নিয়ে সুশীল সমাজ উভয় পক্ষে দোষারোপ করছে। এতে পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসীদের সাহায্য করা হচ্ছে।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ অভিযোগ করেন জয়। আওয়ার নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারছে। এটা এমন একটি জঘন্য এবং নৃশংস কাজ যে যুদ্ধের সময়ও জেনেভা কনভেশন দ্বারা একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে নিষিদ্ধ করা রয়েছে। আপনি এই বিষয়ে বলতে গেলে সবার আগে যারা দায়ী তাদের নাম বলতেই হবে এবং এই জঘন্য কাজ বন্ধে নিঃশর্তভাবে দাবি জানাতে হবে। এখনো আমাদের তথাকথিত “সুশিল সমাজ” সেটি করেনি। তার পরিবর্তে তারা প্রথম দিন থেকে এর নাম দিয়েছে রাজনৈতিক বিরোধ এবং দায়ী করছে উভয় পক্ষকে। আবার কেউ কেউ আছেন যে বিএনপি জামায়াতের এইসব দুষ্কর্মের যৌক্তিতা ব্যাখ্যা করছেন।

পৃথিবীতে এমন কিছুই নাই যা মহিলা ও শিশুদের পুড়িয়া মারাকে যথার্থ বলতে পারে। এমনকি যদি বিএনপি মনে করে তাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে তবুও সেটা যথার্থ বলতে পারে না, কোন অযুহাতেই না। এমনকি যদি তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় এবং আর কোন উপায় নাও থাকে তবুও মানুষ পুড়িয়ে মারা যথার্থ হতে পারে না। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে দোষারোপ করে আমাদের “সুশিল সমাজ” মানুষ জীবন্ত indexপুড়িয়ে মারাকে চূড়ান্তভাবে বৈধতা দিচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক অব্যহত জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারার মাঝে সরকারের প্রতি ছাড় দাবী করা এবং সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে তারা মূলত ভাবছে ভয় দেখিয়ে কৌশলে দাবী আদায়ে বাধ্য করবে।

আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০১৩ সালে আমরা অব্যহত চেষ্টা করেছি বিএনপিকে সংলাপে আনতে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ তাদের যেকোন মন্ত্রণালয় দিতে রাজী হয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে খালেদা জিয়াকে ফোন দিয়েছিলেন। বিএনপি কি তখনও মানুষ পুড়ানো বন্ধ করেছিলো? তারা করেনি। এইবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলেন যখন তার পুত্র মারা যায়, কিন্তু তাকে ঢুকতেই দেয়া হলো না। এরপরও আমাদের তাদেরকে বলতে হবে যে, “আসো আলোচনা করি”, যখন তারা মানুষ পুড়িয়েই যাচ্ছে?

এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যারা সংলাপের কথা বলে তাদের বলছি, তোমরা যদি আসলেই মানুষের কথা ভাবো তাহলে যাও হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটগুলো দেখে আসো। দেখো কীভাবে একটা ছোট শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপর প্রথমেই যারা দায়ী তাদের নাম বলো এবং নিঃশর্তভাবে দাবী জানাও “খালেদা জিয়া, মানুষ জীবন্ত পুড়িয়ে মারা বন্ধ করুন”, এতটুকুই। আর কিছু না।

যদি তোমাদের সেটা বলার সাহস না হয়, তবে তোমাদের মুখ বন্ধ রাখো। সংলাপের দাবী করে তোমরা ঐসব সন্ত্রাসীদের আশা দিচ্ছো যে তাদের অপকৌশল কাজে দিতেও পারে। উভয়পক্ষে দোষারোপ করে তোমরা মূলত তাদের দোষটিকে আড়াল করতে চাইছো। তাদের নাম না বলে, তাদের নিঃশর্তভাবে থামার দাবী না করে তোমরা তাদের নাশকতা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছো। এইসব করে আমাদের তথাকথিত “সুশিল সমাজ” পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসীদের সাহায্য করছে।

আপনারা হয় পুড়ে যাওয়া নিরীহ মানুষগুলোর পক্ষে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে দাবী করেন যে এই সন্ত্রাস বন্ধ করো নতুবা আপনি সন্ত্রাসীদের পক্ষে। এখানে মধ্যপন্থা অবলম্বনের কিছু নাই। যখন একটি শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় তখন মধ্যপন্থা বলে কিছু থাকে না।’

সজীব ওয়াজেদ জয় শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে একই সঙ্গে ইংরেজি ও বাংলায় এ স্ট্যাটাস দেন।

বিকেল পৌনে ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ছয় হাজার ৩৬৭ জন স্ট্যাটাসতে লাইক দেন এবং ৪৩৩ জন কমেন্ট করেন। ২৮০ জন স্ট্যাটাসটি তাদের পেজে শেয়ার করেন।



মন্তব্য চালু নেই