১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশংকা

লামায় ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন, জনপথ বিলুপ্তপ্রায়

শাহাব উদ্দিন, বান্দরবান থেকে : বান্দরবানের লামায় নদী ভাঙ্গনের ফলে বিলুপ্ত হচ্ছে শত শত একর ফসলি জমি সহ বসত ঘর। রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দূর্গম নাইক্ষ্যং ও লইক্ষ্যং মৌজা থেকে নেমে আসা ‘লামা খালের’ ভাঙ্গনের কবলের অংহ্লারী পাড়া এলাকার ৫ কোটি ব্যায়ে নির্মিত অংহ্লারী পাড়া ব্রিজ, মসজিদ, অংহ্লারী পাড়া বাজার ও অর্ধ শতাধিক জনবসতি ভাঙ্গনের কবলে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শফিউল আলম মেম্বার জানায়, বিগত কয়েক বছর যাবৎ অংহ্লারী পাড়া এলাকার লামা খালের পশ্চিম পাশে প্রায় ২ হাজার গজ নদীর পাড় ভেঙ্গে চলেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু চাষের জমি, বসতবাড়ি ও রাস্তা নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। যেভাবে পাড় ভাঙ্গে যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত অংহ্লারী পাড়া ব্রিজটি হেলে পড়বে। অতি শীঘ্রই নদী শাসনের ব্যবস্থা করা না গেলে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার সরকারী ও বেসরকারী সম্পদ নদীর ভাঙ্গনে হারিয়ে যাবে।

সরেজমিনে পরিদর্শনকালে স্থানিয়রা এ প্রতিবেদককে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায় পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে সরকার পযার্প্ত বরাদ্দ দেয়ার পর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিস্ক্রিয়তা দেখে মনে হয় পার্বত্য এলাকায় তাদের কোন দায়দায়িত্ব নাই। এলাকাবাসী এই বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
৬নং রুপসীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, এই বিষয়ে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড অথবা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙ্গনরোধে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য এ চিত্র শুধু রূপসী পাড়া ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়া নয় গত কয়েক বছরে মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গনে লামা পৌর এলাকার রাজবাড়ী, কুড়ালিয়ারটেক, লামামুখ বাজার, সাবেক বিলছড়ি, লাইনঝিরি- সড়ক, চাম্পাতলী আর্মিক্যাম্প, টি.টি এন্ড ডি,সি, হাসপাতাল পাড়া, স’মিল পাড়া, লামা বাজার পাড়া, বাজার ঘাট সংলগ্ন ফরেষ্ট অফিস, শীলেরতুয়া মার্মা পাড়া, সাবেক বিলছড়ি মার্মা পাড়া ও সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা, মেউলারচর, রূপসী পাড়ার অংহ্লাপাড়া, শীলেরতুয়া এলাকার বহু সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, ফসলী জমি, ঘরবাড়ী মাতামুহুরী নদীর দু’কূলের অব্যাহত ভাঙ্গনে দুই তৃতীয়াংশ স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু সেন বলেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গনের প্রতি বর্ষা মৌসুমে এলাকার পাকা ও কাচা রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, সরকারী বেসরকারী ভবন ও বসতঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছ। অচিরেই এ নদী ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে আগামী কয়েক বছরেই পৌর এলাকাসহ ইউনিয়নগুলো নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় আমরা বার বার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মাতামুহুরী ও লামা খালের বিভিন্ন অংশ দিয়ে নদী ভাঙ্গছে। এছাড়া মাতামুহুরী নদীর গতিপথ পরিবর্তনে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই