লাকী আখন্দের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে

আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে সংগীতের কিংবদন্তি পুরুষ লাকী আখন্দের শারীরিক অবস্থার। ভোর রাতের দিকে স্বাভাবিক হয় তার শ্বাস-নি:শ্বাস। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন লাকীর কন্যা মামিন্তি।

তিনি বলেন, ‘গেল কয়েকদিন ধরেই বাবার শরীরটা খুব খারাপ। তার লাস্ট স্টেজ চলছে। গতকাল রাতে একটু বেশিই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো অবস্থা। আইসিইউতে নেয়ার পরিকল্পনাও ছিলো। কিন্তু শেষাবধি চিকিৎসকরা ওয়াের্ডে রেখেই চিকিৎসার পরামর্শ দিলেন। আল্লাহর রহমতে ও সবার দোয়ায় বাবা অনেকটা ভালো আছেন।’

তিনি অনুরোধ করে বলেন, ‘আমি বাবার সকল প্রিয় মানুষ, ভক্ত ও গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ করবো বাবার জন্য দোয়া করুন। কেউ নিশ্চিত না হয়ে কোনো খারাপ সংবাদ ছড়াবেন না। যারা দেখতে আসছেন তারা হাসপাতালের সার্বিক অবস্থার কথা মাথায় রাখবেন।’

গতকাল শিল্পীকে হাসপাতালে যান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা উত্তরের মেয়ের আনিসুল হকসহ আরো অনেকেই।

প্রসঙ্গত, দেশের কিংবদন্তি গানের মানুষ লাকী আখন্দ। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন তিনি; যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। অসংখ্য কালজয়ী গান সুর করেছেন, গেয়েছেনও। এর মধ্যে উল্লেখ করা যায় ‘আমায় ডেকো না’, ‘এই নীল মনিহার’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’, ‘এতো দূরে যে চলে গেছ’ ইত্যাদি।

লাকী একজন নিভৃতচারী সৃষ্টির কারিগর। কখনোই নিজেকে প্রচারের স্রোতে ভাসাননি। গান করেছেন, সুর করেছেন; গানের সঙ্গেই বেঁধেছেন প্রাণ। আর সেই বন্ধনের জোরেই কয়েক প্রজন্মের কাছে সংগীতাঙ্গনের প্রিয় মানুষ তিনি। সর্বশেষ তিনি ২০১৫ সালের জুনের এক সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার একটি ক্লাবে গীতিকার আসিফ ইকবাল আয়োজিত একটি গানের অনুষ্ঠানে সরাসরি গান করেছিলেন। সেদিন তিনি গলা খুলে গেয়েছিলেন ‘নীল মনিহার…’। তার সঙ্গে গলা মিলিয়েছিলেন শত শত উপস্থিত অতিথি।

তার কিছুদিন পরই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখনই ব্যাংককের পায়থাই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। প্রথম দফায় শরীরে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এরপর অক্টোবরের প্রথম দিকে ঢাকায় নিজ বাসায় ফেরেন লাকী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় নভেম্বরে তাকে ফের ব্যাংককে নেওয়া হয়। এ অবস্থায় তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেন।

এরপর আরও অনেকেই পাশে দাঁড়ান এই শিল্পী। বেশ কয়েক দফায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চলে তার চিকিৎসা। সর্বশেষ তাকে জনসম্মুখে দেখা গিয়েছিলো ১২ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত লেজার ভিশনের একটি অ্যালবাম প্রকাশনার আয়োজনে।

হঠাৎ করেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দুই সপ্তাহ আগে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে ভর্তি হন। এখনো সেই চলছে সেই পর্বের চিকিৎসা।



মন্তব্য চালু নেই