রাউজানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহকর্তার আত্মহত্যা

চট্টগ্রামের রাউজানে গৃহকর্তা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারী মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের নোয়াজিষপুর গ্রামের নতুনহাটের পশ্চিম পাশের হায়দার আলী চৌধুরী বাড়ীর গৃহকর্তা মোহাম্মদ ইউছুপ (৬৭) নিজ ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

আত্মহননকারী ব্যক্তির ২ মেয়ে ১ ছেলে বড় মেয়ে বিবাহীত এবং ছোট মেয়ে দশর শ্রেণীতে পড়ে। তার আপন ভাই ফারুক সওদাগর বলেন, আমার ভাই একজন অসুস্থ ও প্যারালাইসেস এর রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েক বছর চিকিৎসাধীন ছিল এবং তিনি স্বাভাবিক ভাবে হাটতে পারতো না।

সোমবার রাতে আমার ভাই আমার সাথে ব্যবসায় সংক্রান্ত কিছু কথা বলে। সেই আমাকে মুরগীর দোকান দেওয়া কথা বলেন, আমি ভাইকে বলি টাকা পয়সাতো নাই। সেই আমায় বলে আমার মেয়ের জামাই থেকে দশহাজার টাকা নিয়ে মুরগীর ব্যবসা করবো। আমি বলি দশ হাজার টাকা নিয়ে মুরগীর ব্যবসা না করে এখন যে জুতার দোকান রয়েছে সেই দোকানে কিছু মালামাল তুলে নতুন করে ব্যবসা করো এবং সংসারে যা প্রয়োজন হয় তা আমরা দেখবো। এই বলে রাতে আমার দোকান বন্ধ করে ঘরে চলে আসি, রাতে নামায পড়ে খাওয়ার শেষে টিভিতে খবর দেখে রুমে সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। আমার ভাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়ে এবং পরে ফারুকের স্ত্রী রুমে গিয়ে নাস্তা করার জন্য খুজ করলে তিনি দেখতে পায় রুম খালি। এদিক সেদিক খুজ করতে করতে দেখতে পায় মাঝ রুমে গাছের সিড়ির উপরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করলে বাড়ীর সবাই ছুটে আসে বলে জানান ফারুক। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মুছা সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে আসে চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে ফোনে খবর দেন।

আত্মগহননকারীর স্ত্রী জানান, আমি বেশ কয়েকদিন আমার বাপের বাড়ী ছিলাম ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে। তবে আমাদের পরিবারের মধ্যে ওনার ভাইদের মধ্যেও কোন ধরনের বিরোধ-বিবাদ ছিলনা। তিনি আমায় সব সময় বলতো টাকা পয়সার কথা। আমি বিভিন্ন ভাবে ওনাকে শান্তনা দিতাম।

তিনি আরো বলেন, আমার স্বীমার আগে টাকা-পয়সার কোন কমতি ছিলনা। কিন্তু বিদেশ থেকে আসার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং আর্থিক ভাবে সংসারে অসচ্ছলতা দেখা দেয়। তিনি শরীরিকভাবে অসুস্থ ও প্যারালাইসেস এর রোগী স্বাভাবিক ভাবে চলা ফেরা করতে পারতো না। সব সময় আর্থিক সংকটের কথা ভেবে চিন্তিত থাকতো এবং সেই টেনশনের কথা বলে বলতো আমি গলায় ফাঁস দিব।

স্থানীয়রা বলেন, তিনি নতুনহাট বাজারে জুতার দোকান করতো এবং জুতার দোকানে কোন কাস্টমার যেত না, কারণ তার দোকানে মালামাল ছিল খুব কম। তিনি সব সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে চিন্তিত থাকতো। তারা আরো বলেন, তিনি হয়তো ব্যবসা বা পরিবারের আর্থিক সংকটের কথা মাথায় এনে টেনশনে আত্মহত্যা করছে বলে এবং তার কোন শ্র“ত বা পাওনাদার ছিলনা। তবে তিনি ফরেজগারী মানুষ ছিলেন বলেন স্থানীয়রা বলেন।

নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার্দী সিকদার বলেন, আমি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং দেখতে পায় সিড়ি উপর ফাঁস লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং ঘটনা সত্য। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল অসচ্ছল এবং সেই অসুস্থ ছিল। পরিবারের মধ্যে কোন ধরনের বিরোধ ছিল না বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, যদি আইনি প্রক্রিয়ায় পোর্টমডাম করতে হয় অবশ্যই করবো। তবে এটি একটি আত্মহত্যা বলে স্থানীয়দের অভিমতে উঠে আসেছে।



মন্তব্য চালু নেই