ব্যবহারের পর অবশ্যই ছিঁড়ে ফেলবেন এসব জরুরী কাগজপত্র!

দৈনিক বিভিন্ন ধরণের কাগজপত্র নিয়ে কাজ করতে হয় আমাদের। তার মাঝে কিছু হলো অফিসের কাগজপত্র যা অবশ্যই গোপনীয়। কিছু কাগজ আবার আছে যা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে সম্পর্কিত। এগুলো অনেক সময়েই আমরা অবহেলা করে ফেলে দিই কিন্তু এই কাজটি করা আমাদের জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে। ফেলে দেবার আগে এই কাগজ নিদেনপক্ষে ছিঁড়ে ফেলবেন যাতে সহজে তথ্য বোঝা না যায়। মনে রাখবেন, আপনার বাসার বাইরে আবর্জনায় চলে গেলে ওই তথ্য যে কেউ ব্যবহার করতে পারে এবং আপনার ক্ষতি করতে পারে। আইডেন্টিটি চুরি হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। দেখে নিন কী কী কাগজ এভাবে ছিঁড়ে নষ্ট করে ফেলাটা জরুরী।

১) বিমানের বোর্ডিং পাস

কোথাও বিমানে ভ্রমণ করতে গেলে ওই জায়গায় ল্যান্ড করার পর পরই ছিঁড়ে ফেলুন বোর্ডিং পাস। এতে আছে আপনার নাম, আপনার ট্রাভেল প্ল্যান এবং এমন একটা বার কোড, ফ্রি ওয়েবসাইটের সাহায্যে যে কেউ তার পাঠোদ্ধার করতে পারে। এই কোড থেকে অনেক সময়ে জেনে নেওয়া যায় আপনার আগামী দিনের ভ্রমণের পরিকল্পনা। এমনকি দুষ্কৃতিকারীরা আপনার বদলে নিজেরাই ভ্রমনে চলে যেতে পারে এমনকি ট্রিপ ক্যান্সেল করতেও পারে।

২) প্রেসক্রিপশন

এসব কাগজেও থাকে আপনার নাম। এছাড়া থাকে ওষুধের ব্যাপারে এবং আপনার অসুস্থতার ব্যাপারে তথ্য। এটা ব্যবহার করে কেউ বাটপারি করতে পারে এমনকি এসব ওষুধ তারা নিজেরাও কিনে নিতে পারে। আমাদের দেশে প্রায়ই দেখা যায়, নিজের আত্মীয়ের অসুস্থতার কথা বলে, তার প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে টাকা চান অনেকে। একজন অসুস্থ মানুষের প্রেসক্রিপশন চুরি করে এই কাজটি সহজেই করা যায়। আবার খুব কড়া ডোজের ওষুধ আছে, এমন প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করতে পারে মাদকাসক্ত বা আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তিরা।

৩) কেনাকাটার রিসিপ্ট

আপনি কি জানেন, আপনার ফেলে দেওয়া রিসিপ্টগুলো আসলে চোর-ডাকাতের শপিং লিস্ট হিসেবে কাজ করে? এগুলো আপনার আবর্জনার ঝুড়ি থেকে বের করে তারা দেখে নিতে পারে আপনার বাসায় সম্প্রতি কী কী দামী জিনিস এসেছে এবং চুরি করার সময়ে তারা এগুলোকেই টার্গেট করে। আপনার ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের রিসিপ্ট থেকে তারা আপনার কার্ডের শেষের অংকগুলো দেখে নিতে পারে, আপনার একাউন্টে কতো টাকা আছে দেখতে পারে, আপনার সিগনেচারও নকল করতে পারে। তাই এগুলো ফেলার আগে একেবারে কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলুন।

৪) জীবনবৃত্তান্ত

চাকরি অথবা অন্য কোনো দরকারে বায়োডাটা বা রেজুমি তৈরি করার পর এগুলোর কপি সাবধানে রাখুন। ফেলে দেবেন না। কারণ এ থেকে পাওয়া যায় আপনার নাম, ছবি, ফোন নাম্বার, ঠিকানা, ইমেইল অ্যাড্রেস এবং পড়াশোনার ব্যাপারে সব তথ্য।

৫) ট্যাক্স এবং ব্যাংক সংক্রান্ত কাগজপত্র

ট্যাক্স রিটার্ন কাগজগুলো বেশ মুল্যবান। এগুলোকে বাসায় রাখলে বেশ যত্ন করে রাখুন। আর যদি ফেলে দিতে চান, তাহলে ৩-৪ বছর পর ফেলে দিতে পারেন কিন্তু অবশ্যই একেবারে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়বেন যাতে কোনো তথ্যই বোঝা না যায়।

একইভাবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং আপনার একাউন্ট নাম্বার আছে এমন যে কোনো কাগজ ছিঁড়ে ফেলুন। যেমন ক্যান্সেল হওয়া চেক, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড ইত্যাদি।

৬) পুরনো আইডি কার্ড

স্মৃতি ধরে রাখার জন্য অনেকেই নিজেদের পুরনো আইডি কার্ড রেখে দেন। কিন্তু আপনি যদি এগুলো ফেলে দিতে চান তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন তথ্য মুছে, ছবিটা নষ্ট করে তারপর ফেলুন।

এছাড়াও যেসব জিনিস ছিঁড়ে/নষ্ট করে তারপর ফেলা উচিৎ তা হলো-

– মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট

– বার্থ সার্টিফিকেটের কপি

– লিগ্যাল ডকুমেন্ট

– ইনভেস্টমেন্ট, স্টক এবং প্রপার্টির রেকর্ড

– পাসওয়ার্ড অথবা PIN number আছে এমন কাগজ

– ইলেক্ট্রিসিটি, পানি বা গ্যাসের বিল



মন্তব্য চালু নেই