ফাইনালে জার্মানির সঙ্গী আর্জেন্টিনা

টাইব্রেকার ডাচদের স্বপ্ন গুড়িয়ে ফাইনালে পাড়ি জমালো আর্জেন্টিনা। আর কোটি কোটি ভক্তের আশার প্রদীপ হাতে নিয়ে ফাইনালে পাড়ি দিলেন লিওনেল মেসিও। আর অন্যদিকে ইতিহাসের দায় মিটাতে প্রতিশোধ নেয়ার মিশনে নেমে ব্যর্থতা নিয়ে ফিরতে হলো রোবেন-পার্সিদের। বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ২ টায় কারিন্থিয়াস স্টেডিয়ামে মূল ও অতিরিক্ত মোট ১২০ মিনিটের খেলায় গোলশুন্য সমতা শেষে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জয়ী হয়েছে আলবেসেলেস্তিরা। সেই সঙ্গে সাও পাওলোর কারিন্থিয়াস স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল বিজয় মঞ্চটা রচনা হয়ে গেল আলবেসেলেস্তিদের।

দুর্দান্ত এক লড়াই দেখতে পেল ফুটবল বিশ্ব। পেনাল্টি ভাগ্যে মেসিদের জয়ের আগ পর্যন্ত খেলার ফল ছিল পুরোপুরি অনিশ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুটআউটের এই হারটা ডাচদের সামনে ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের স্মৃতিটা আবারও যেন ফিরিয়ে আনল। এর আগে অবশ্য মেসি-হিগুয়েনরা যেভাবে আক্রমণ চালিয়ে আতঙ্ক জাগিয়েছে ডাচ রক্ষণে ঠিক তেমনি আতঙ্ক জাগিয়েছে স্নাইডার-রোবেনরাও। ১২০ মিনিট সমান তালে লড়েও টাইব্রেকারে আলবেসেলেস্তিদের কাছে নতজানু হতে হল ফন গলের শিষ্যদের। আর একই সঙ্গে গ্যালারিতে উৎসবে মেতে উঠলো আকাশী সাদা রঙ্গে রাঙ্গান সমর্থকরা। উৎসবটা সীমানা ছাড়িয়েছে আর্জেন্টিনা শিবিরের খেলোয়াড়দেরও। আর লিওনেস মেসির জন্যতো ফাইনালটা হবে ম্যারাডোনা-পেলেদের ছোঁয়ার সুযোগ। তাই আনন্দের সবটুকু উপভোগ করলেন এই চার বারের ব্যালন ডি’আর জয়ী তারকাও।

প্রথমার্ধে লড়াইটা হয়েছে সমান তালে। তবে বলের দখলে সামান্য এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। আর এসময় সুযোগ পেয়েও ব্যবধান তৈরি করতে সফল হননি আর্জেন্টাইনরা। ১৪ মিনিটে মেসির প্রথম ফ্রি কিক ধরে ফেলে নেদারল্যান্ডের গোলরক্ষক সেলিসেন। ২৪ মিনিটে লাভেজ্জির কর্নারে অল্পের জন্য হেড নিতে ব্যর্থ হন গ্যারে। ৪৯ মিনিটে আর্জোন্টনার বিপদ সিমানায় বল পেয়ে যান নেদারল্যান্ডসের ফরোয়ার্ড রোবেন কিন্তু সেই সময়ে আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার ডেমিকেলিস তাকে থামিয়ে দেন।

দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের জন্য দুই দলই দৌড়েছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত। ৫৪ মিনিটে লাভেজ্জির পাস থেকে বল বিপদ সীমানায় পেয়েও লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হন হিগুয়েন। ডাচ ডি বক্সের ডান প্রান্তে কয়েকবার ডিফেন্স ভাঙ্গার চেষ্টা করেন মেসি। কিন্তু এই সব কিছুই ছিল নিষ্ফল। ৭৫ মিনিটে গোলের খুব কাছে থেকে ফিরে আসে এল পিপা খ্যাত হিগুয়েন। ৮৬ মিনিটে মেসির ডিফেন্স চেরা পাসে বল পেয়েও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি আগুয়েরো। ৯০ মিনিটে রোবেনের শট ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার মাসচেরানো। এই সেভ করতে না পারলে হয়ত নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়ে যেতে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ। তবে নব্বই মিনিট সমতা বজায়ে থাকায় খেলা গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ে গোলের সুযোগটা বেশি সৃষ্টি করে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। তবে সেই তিরিশ মিনিটও নিস্ফলা থাকায় খেলার নিস্পত্তিটা হয় পেনাল্টি শুটআউটে। আর্জেন্টিনার পক্ষে পেনাল্টি শুটআউটে গোল করেন লিওনেল মেসি, ইজাকুয়েল গ্যারে, সার্জিও আগুয়েরো ও ম্যাক্সি রদ্রিগেজ। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের আরিয়েন রোবেন, ডার্ক কুইট, গোল করলেও মিস করেন স্নাইডার ও রন ভ্লার। আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিয়ো রোমেরো দুটি পেনাল্টি শুটআউট আটকে দেন এসময়। ফলে ৪-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফাইনালে জার্মানদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নামটা লেখা হয়ে গেল সাবেলার শিষ্যদের।



মন্তব্য চালু নেই