জেমস ফিনলের বাগানেই উৎপাদন হচ্ছে গ্রিন টি

সৌরভ আদিত্য, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : দেশের অন্যতম গ্রিন টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জেমস ফিনলের শ্রীমঙ্গল জাগছড়া চা বাগানে তৈরি গ্রিন টি পাকিস্তানে রপ্তানী হচ্ছে। গত মৌসুমে প্রতিষ্ঠানটি দেড় লাখ কেজি চা উৎপাদন করে। নতুন মৌসুমের চা উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিনলে টি কোম্পানী। এরই মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ মেইনটেন্যান্স কাজ শেষ হয়েছে। শিগিরিই তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে বলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জানা যায়, দেশের অন্য সব বাগানে ব্ল্যাক টি উৎপাদন হলেও ফিনলের জাগছড়া চা বাগান শুধুই গ্রিন টি তৈরি করে। জাগছড়ার গ্রিন টি আমদানিকৃত গ্রিন টির চেয়েও ভালো বলে চা বিশেষজ্ঞ ও পানকারীরা উল্লেখ করেছেন। গ্রিনটিতে অত্যাধিক ভেষজ গুণাগুণ থাকায় দেশের ব্ল্যাক টির সঙ্গে সঙ্গে এ চায়েরও চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।

ফিনলে মানসম্মত গ্রিন টি উৎপাদন করায় পাকিস্তানে রপ্তানী করছে। চা বিজ্ঞানী ও চা পানকারীরা মনে করেন, যেহেতু দেশীয় তৈরি গ্রিন টি বিশ্বমানের, সেহেতু বহির্বিশ্ব থেকে গ্রিন টি আমদানি না করে দেশে উৎপাদন বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা যায়। বিশেষজ্ঞরা জানান, গ্রিনটি দাঁতের ক্ষয় ও হদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং মেদ নিয়ন্ত্রণ করে। তা ছাড়াও এটি ব্ল্যাক টির মতো শরীরের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে সতেজ করে তুলে।

যেহেতু এর মধ্যে ভেষজ গুণাগুণ আছে সেহেতু বাংলাদেশে গ্রিন টির আরও চাহিদা বাড়ানো সাপেক্ষে উৎপাদনও বাড়ানো প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টদের মত।জানা যায়, গ্রিন টি উৎপাদনের পদ্ধতি অন্য চায়ের চেয়ে একটু আলাদা। অন্য চা তৈরি করতে হয় সিটিসি পদ্ধতিতে আর গ্রিন টি করতে হয় অর্থোডক্স পদ্ধতিতে। স্টিমিং করে (ফুটন্ত পানির ধোঁয়া দিয়ে) ফার্মেন্টেশন বন্ধ করা হয় এবং এটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে অক্সিডেশন করা হয়।

এটির উৎপাদন বাড়াতে সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ চা বোর্ড বিটিআরআই পরীক্ষণ ফেক্টরিতে সিটিসির সঙ্গে স্টিমিং পদ্ধতি চালু করে গ্রিন টি তৈরির ব্যবস্থা নিতে পারে। একই সঙ্গে টি বোর্ডের পরিচালিত নিউ সমনবাগ ও দেওরাছড়া চা বাগানের যেকোনো একটিকে শুধু গ্রিন টি উৎপাদনী বাগান হিসেবে রূপান্তরিত করা যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা সুপারিশ করেছেন। জেমস ফিনলের ভাড়াউড়া ডিভিশনের ডিজিএম ও দেশীয় চা সংসদের সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান গোলাম মো. শিবলী জানান, জেমস ফিনলে চেষ্টা করছে গুণগতমানের গ্রিন টি ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে।

এরই মধ্যে এ চা বেশ প্রশংসাও কুড়িয়েছে। বিগত মৌসুমে জাগছড়া বাগান থেকে প্রায় দেড় লাখ কেজি গ্রিন টি উৎপাদন হয়, যাতে দেশীয় চাহিদা পূরণ শেষে পাকিস্তানে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে। তিনি জানান, চলমান মৌসুমে তারা এখনো উৎপাদন শুরু করতে পারেননি। ফেক্টোরিতে মেন্টেইনেন্স কাজ চলছে। এ মাসের মধ্যেই তারা উৎপাদনে যাবেন। বাজারে গ্রিন টি ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়



মন্তব্য চালু নেই