চটজলদি থামিয়ে ফেলুন শিশুর কান্না

বাচ্চার কান্না থামানোটা বাবা-মা বা বেবিসিটার এর জন্য অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। শিশুরা তাঁদের প্রয়োজনের কথা বলতে পারেনা। ক্ষুধা লাগলে, ঘুম আসলে, ব্যাথা পেলে বা ব্যাথা করলে, ভয় পেলে ইত্যাদি নানা কারণে শিশু কাঁদতে পারে। আজ আমরা শিশুর কান্নার কারণ গুলো জেনে নিব।

১।ক্ষুধা

শিশুর কান্না শুনে প্রথমেই যে ধারণাটি করা হয় তা হল শিশুর ক্ষুধা লেগেছে। সদ্যজাত শিশুর কিছু লক্ষণ দেখে এটা বুঝা যায়, যেমন- অস্থির হয়, ঠোঁট কামড়ায়, তাদের গালে হাত লাগানো হলে তাঁদের মাথা হাতের দিকে ঘুরায় এবং নিজের হাত মুখে দেয়।

২। ডায়াপার নোংরা হলে

কিছু শিশু ডায়াপার নোংরা হলেই অস্বস্তি প্রকাশ করে ও কাঁদে। আবার কিছু শিশু এটা অনেকক্ষণ সহ্য করতে পারে।

৩। ঘুমের জন্য

শিশুরা অনেক ভাগ্যবান যে তাঁরা যেকোন সময় যেকোন জায়গায় ঘুমিয়ে যেতে পারে।যখন শিশু ক্লান্ত হয় তখন ঘুমের প্রয়োজন হয়। আর তখনই শিশু কাঁদে, মাথা নাড়ে ও অস্থির হয়।

৪। সে বাবা-মায়ের সান্নিধ্য চায়

শিশুরা আদরপ্রিয়। তারা পিতা-মাতার মুখ দেখতে চায়, তাদের কন্ঠ শুনতে চায়, তাঁদের হৃদস্পন্দন শুনতে চায় এমনকি তাদের গায়ের আলাদা গন্ধও তাঁরা চিনতে পারা। শিশুর যখন বাবা-মায়ের সান্নিধ্য প্রয়োজন হয় তখন ও কাঁদতে পারে।

৫। পেটের সমস্যা হলে

পেটে গ্যাস হলে বা পেট ব্যাথা করলে শিশু কাঁদতে পারে। শিশু যদি পেটের কোন সমস্যায় ভোগে তাহলে অনেকক্ষণ যাবত কান্না করতে থাকে। যদি খাওয়ার পর পরই শিশু কাঁদে তাহলে বুঝতে হবে যে পেট ব্যাথার জন্য কাঁদছে। এমন হলে ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন।

৬। বেশি ঠান্ডা বা বেশি গরম হলে

যখন আপনি ন্যাপি চেঞ্জ করার সময় তাঁর জামা খুলেন এবং ঠাণ্ডা ও ভেজা টিস্যু দিয়ে মুছেন তখন সে ঠাণ্ডা অনুভব করে বলে কাঁদে। শিশুরা গরমের চেয়ে ঠান্ডাকে অপছন্দ করে।

এছাড়াও হঠাৎ জোরে কোন শব্দ শুনলে, ব্যাথা পেলে বা ভয়ের কিছু দেখলেও শিশু কান্না করে।

এবার আসুন জেনে নেই কান্না বন্ধ করার উপায় গুলো-

· শিশুর যদি ক্ষুধা পায় তাহলে খাবার দিলে শিশুর কান্না বন্ধ হয়।

· UCLA School of Medicine এর শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ও এসোসিয়েট প্রফেসর ওThe Happiest Baby বইটির লেখক Dr. Harvey Karp বলেন, সদ্যজাত শিশু জড়িয়ে থাকতে ও উষ্ণ থাকতে পছন্দ করে তাহলে সে মায়ের গর্ভে থাকার অনুভূতি পায়। শিশুকে ভালো করে জামা পরিয়ে দিলে যাতে তার ঠান্ডা না লাগে ও কোলে নিলেও কান্না বন্ধ হয়।

· সদ্যজাত শিশুর পাশ পরিবর্তন করে দিলেও কান্না বন্ধ হয়। সাধারনত বাম পাশে কাঁত করে শোয়ালে শিশুর কান্না বন্ধ হয়।

· শিশুকে দোলালে ও শিশুর কান্না বন্ধ হয়। কারণ দোল খাওয়ালে সে মনে করে যে মায়ের গর্ভের ভিতরে আছে এবং সে শান্ত হয়।

· বাবা-মায়ের স্পর্শ পেলে শিশু নিরাপদ বোধ করে ও শান্ত হয়। এতে উভয়ের শরীরের তাপমাত্রা, হার্ট রেট ও স্ট্রেস হরমোন স্থির হয় এবং অক্সিটোসিন হরমোনকে উদ্দীপিত করে যা পিতা-মাতা ও সন্তানের বন্ধন ও ভালোবাসাকে দৃঢ় করে।

· ইউনিভার্সিটি অফ মন্ট্রিলের সেন্টার ফর রিসার্চ এর ব্রেইন, মিউজিক এবং ল্যাঙ্গুয়েজ এর প্রফেসর Isabelle Peretz তাঁর এক গবেষণায় প্রমাণ করেন যে শিশুরা কথার চেয়ে গান শুনে বেশি শান্ত হয়।



মন্তব্য চালু নেই