কেমন আছেন, কোথায় আছেন ‘ইত্যাদি’র সেই আকবর?

কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে পরিবেশন করে রাতারাতি লাইমলাইটে চলে আসেন। এরপর আকবর খ্যাতি জশে অনেক তারকা সঙ্গীতশিল্পীকে পেছনে ফেলে দেন। ইত্যাদিতে গানের প্রচারের পর ‘একদিন পাখি উড়ে…’ শিরোনামে অ্যালবাম প্রকাশ করে ৬ লাখ টাকা পান সঙ্গীতার কাছ থেকে। এরপরই ‘তোমার হাতপাখার বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে আসে, কিছু সময় আরও তুমি থাকো আমার পাশে’ এই গানের অ্যালবামের জন্যও অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সঙ্গীতা ৭ লাখ টাকা দেয়। ‘টাইম ভ্যালু অফ মানি’ অনুযায়ী সেই টাকার মূল্যমান অনেক। বদলে যেতে থাকে আকবরের জীবনধারা।

যুক্তরাষ্ট্রে তিনমাস কনসার্ট করে নিজের জীবনযাত্রাকে আরো সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হন। দেশে ফিরেও বিভিন্ন স্থানে কনসার্ট করতে লাগলেন। কিন্তু সুখের মাঝে হয়তো চিঁড় ধরে এটাই স্বাভাবিক। আকবরের জীবনেও নেমে এলো অন্ধকার অধ্যায়। মা মারা গেলেন ২০০৮ সালের ২৪ অক্টোবর। মুষড়ে পড়েন মা ভক্ত আকবর। মিডিয়া থেকে হারিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মায়ের মৃত্যুকেই সামনে আনলেন। আকবর বলেন মা মারা যাওয়ার পরে আমি আপসেট হয়ে পড়ি। কেননা আমার মায়ের মৃত্যু আমাকে ভেতর থেকে ভেঙে ফেলে। গান থেকে দূরে সরে যাই।

আবার কীভাবে গানে ফেরা? আকবর বলেন, এরপরে গানে ফিরলেও আমি তেমন কিছুই করতাম না, শুধু এখানে সেখানে কনসার্ট করতাম। বলা যায় মিডিয়ার আলোর বাইরে ছিলাম। এরই মাঝে গত বছর অসুস্থ হয়ে পড়ি। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আমাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। একইসাথে নানারোগ আমাকে আক্রমণ করে বসে, যক্ষ্মা, কিডনিরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশয়ী হয়ে পড়ি। টানা দুইমাস হাসপাতাল ছিলাম। এই দুরবস্থা থেকে আমাকে উদ্ধার করেন হানিফ সংকেত স্যার।

আকবর বলেন, তিনি আমাকে তুলে এনেছেন, তিনি এই দুর্দিনেও পাশে দাঁড়ালেন। এরপর আমি সুস্থ হলে আমাকে ইত্যাদিতে ফের গান গাওয়ার সুযোগ দেন। বলা যায় এই গানটাই আমাকে নতুন জীবন দিয়েছে। আমি ফের মূলধারায় ফিরে এসেছি। অনেকগুলো কাজ আমার হতে রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আমেরিকা টুর রয়েছে। এছাড়াও সঙ্গীতার ব্যানারে আমার অ্যালবামের কাজ চলছে। খুব শিগগির বাজারে আসবে।

পূর্ণিমাকে বিয়ে করতে চেয়েছেন? এমন প্রশ্ন তো বাতাসে ঘুরে বেড়ায়? আকবর বলেন, ভাই এটা একটা গুজব। আমি তার সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি এটাই তো অনেক বড় আমার জন্য। ধরতে গেলে আমি একজন টোকাই। আর এই টকাই থেকে হানিফ সংকেত স্যার আমাকে তুলে এনেছেন। আমি কীভাবে তার মর্যাদাহানি করবো বলেন? আর আমাকে সবাই চেনে ইত্যাদির আকবর হিসেবে। শুধু আকবর বললে কেউ চেনে না। আমি ইত্যাদির আকবর হয়েই থাকতে চাই।

আকবরের জন্ম খুলনা জেলার পাইকগাছায়। বেড়ে ওঠেন যশোরে। এক সময় যশোর শহরের অলিগলিতে রিকশা চালাতেন আকবর। সেখানে টুকটাক গান করতেন। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। সেই অনুষ্ঠানে বাগেরহাটের এক ভদ্রলোক আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপর তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ইত্যাদির টিম আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে, ফিরবে না সেতো আর কারও আকাশে’- কিশোর কুমারের এ গান গেয়ে ঝলমলে আলোয় চলে আসেন আকবর।-কালের কণ্ঠ



মন্তব্য চালু নেই