এসআইকে প্রকাশ্যে চড়-থাপ্পর মারলেন ছাত্রলীগ সভাপতি

ছাত্রলীগ কর্মীর রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ করায় নাটোরের বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামকে প্রকাশ্যে চড়-থাপ্পর মারার অভিযোগ উঠেছে বড়াইগ্রাম ছাত্রলীগ সভাপতি জিল্লুর রহমান জিন্নার বিরুদ্ধে। রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বনপাড়া বাজারে প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতার এমন আচরণে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে পুলিশ ও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও অভিযুক্ত বড়াইগ্রাম ছাত্রলীগের সভাপতি ও বনপাড়া পৌরসভার মেয়র কেএম জাকিরের ছোট ভাই জিল্লুর রহমান জিন্নাহর বিরুদ্ধে আব্দুল খালেক নামে অপর এক পুলিশ কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেলে বনপাড়া বাজারে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এ সময় একজন ছাত্রলীগকর্মীর মোটরসাইকেলের লাইসেন্স না থাকায় সেটি আটক করেন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা। কিছুক্ষণ পরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও বনপাড়া পৌরসভার মেয়র কেএম জাকির হোসেনের ছোট ভাই জিল্লুর রহমান জিন্নাহ মোবাইলে পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামকে মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দেওয়র জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য আশরাফুল ইসলাম রাজি না হওয়ায় ছাত্রলীগ সভাপতি জিল্লুর রহমান জিন্নাহ ১৫-২০ জন নেতাকর্মীসহ সেখানে এসে উপস্থিত হন। এসময় উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রকাশ্যে জনসাধারণের মাঝে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। এ সময় পুলিশ কনস্টেবলরা এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারপিট করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে পিকআপে করে উপ-পরিদর্শক আশরাফ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলটি নিয়ে চলে যান। প্রকাশ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের মারপিট দেখে বনপাড়া বাজারে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।

এসআই আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এতে মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দিতে রাজি না হওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অশোভন আচরণ করেছে। বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই দয়াল ব্যানার্জি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাকে মারপিট করেনি, গালি-গালাজ করেছে এবং মারার চেষ্টা করেছে বলে শুনেছি।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী জানান, ঘটনা শুনেই তিনি বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেলে ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জিল্লুর রহমান জিন্নাহ জানান, পুলিশের ওই কর্মকর্তা রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেল আটক করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। মারপিট বা লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেনি।



মন্তব্য চালু নেই