‘শাসনের অধিকার আছে, তবে গায়ে হাত তোলার অধিকার নেই’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী পরিবারের সদস্য হিসেবে টাঙ্গাইলের সংসদ সদস্যকে (এমপি) শাসনের অধিকার তাঁর আছে। তবে গায়ে হাত দেওয়ার অধিকার নেই তাঁর।

রোববার জাতীয় ঈদগাহের গেটের সামনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অননুমোদিত ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল।

‘আপনার হাতে টাঙ্গাইলের একজন সংসদ সদস্য লাঞ্ছিত হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে’ বলে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে নো কমেন্টস। আর সংসদ সদস্য তো বলে দিয়েছেন, সেখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

পরে ওবায়দুল আবার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি পরিবার। এ পরিবারের সদস্যদের শাসন করার অধিকার আমার রয়েছে। কিন্তু তাঁর গায়ে হাত দেওয়ার অধিকার আমার নেই। আর সেটা (লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা) সংসদ সদস্য (ছানোয়ার হোসেন) বলেনি।’

‘সেখানে কোনো সাংবাদিক ছিল না। ওটা কোনো আনুষ্ঠানিক সভাও ছিল না। এটাকে সাজিয়ে-গুছিয়ে লেখা হয়েছে। যেখানে সংসদ সদস্য অস্বীকার করেছেন, সেটাকে নিয়ে এত তেতো বানানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না।’

সাজা হলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন—দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা তিনি অন্য কারণে বলেছেন। আমি বুঝি না বিএনপি নেতারা কেন ধরেই নিয়েছেন, মামলায় বেগম জিয়ার দণ্ড হবে। এটা এখনো যদির মধ্যে আছে, দণ্ড হলেও হতে পারে। মামলা যখন হয়েছে, দণ্ড হলেও হতে পারে, না-ও হতে পারে।’

‘আদালত তাঁকে (খালেদা জিয়া) খালাসও দিয়ে দিতে পারেন। এটা আদালতের বিষয়। তাই আমি আগাম কীভাবে বলব, তিনি (খালেদা জিয়া) জেলে যাবেন?’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মওদুদ সাহেব তো একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। তিনি ভালো করেই জানেন, নিম্ন আদালতে একটা রায় হলে, সে রায়টা হয়তো তিনি (মওদুদ আহমদ) ভেবেছেন হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে করিয়ে চূড়ান্ত রায় হতে সময় নেবেন। এ সময়ের মধ্যে হয়তো নির্বাচনের সময় এসে যাবে। তাই এই বোধ থেকেই হয়তো তিনি এ মন্তব্য করেছেন।’

সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের মামলায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গাসহ খুলনা বিভাগে চলা পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মামলার রায়ের পর পরিবহন শ্রমিকরা আমার কাছে পরামর্শ চেয়েছিল। তখন আমি তাদের বলেছিলাম, আদালতের রায় অমান্য করা যাবে না। রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন। কিন্তু ‍অযৌক্তিক ধর্মঘট করে জনগণের ভোগান্তি বাড়বে, এতে তাদের কোনো লাভ হবে না।’

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহনে একটা প্রতিক্রিয়া আসে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পরও পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এমন প্রমাণও আছে। পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণে বিআরটিএর একটি কমিটি আছে। তারা তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ার পর পরিবহনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে ভাড়া নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেন। তাই বাড়ানো হতে পারে। আবার পূর্বেরটাও থাকতে পারে।

মন্ত্রী জানান, আজ রাজধানীতে তিনটি স্থানে অভিযান চলেছে। জাতীয় ঈদগাহের সামনে ছাড়াও বাকি দুটি হলো জাতীয় প্রেসক্লাব ও হোটেল র‍্যাডিসনের সামনে।

জাতীয় ঈদগাহ ও প্রেসক্লাবের সামনে এক ঘণ্টার অভিযানে ২১টি মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা, পাঁচটি গাড়ি ডাম্পিং ও চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই