না.গঞ্জের ঘটনায় ‘বিব্রত’ সংসদীয় কমিটি

‘অপরাধী যতই ক্ষমতাবান হোক রক্ষা নেই’

নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত অপহরণ ও খুনের ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি নিয়ে তারা বিব্রত বলেও জানিয়েছেন।
এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা যতই ক্ষমতাবান হোক তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করেছে এ কমিটি।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সদস্য কিংবা রাজনৈতিক কেউ যদি এতে জড়িত থাকে তাহলে তাকেও ছাড় না দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সাত খুনের ঘটনার সঙ্গে র‌্যাবের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চায় কমিটি। জবাবে র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান কমিটিকে বলেন, ‘জড়িতদের কাউকে রক্ষার কোন চেষ্টা করবো না। অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থান নেবো।’
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি টিপু মুনশী সাংবাদিকদের বলেন, ‘অপরাধী যতো ক্ষমতাবান হোক, তাকে দ্রুত ধরে শাস্তি নিশ্চিত করতে আমরা সুপারিশ করেছি। জড়িতরা রাজনৈতিক নেতাকর্মী হলেও কোন ছাড় নেই। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে আমরা বিব্রত। এ ঘটনার সত্য উদঘাটন ছাড়া বিকল্প আর কোন রাস্তা নেই।’ এসব বিষয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালককে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি আমরা।
কমিটির সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘অপরাধীরা অনেক সময় রাজনৈতিক ব্যানার ব্যবহার করে। আমরা সে বিষয়ে বৈঠকে কথা বলেছি। আমাদের দলের কোন নেতাকর্মী সম্পৃক্ত থাকলেও ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয় নিয়ে বৈঠকে জোর আলোচনা হয়েছে।’
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার শিগগিরই এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করার বিষয়ে কমিটিকে আশ্বাস দেন।
এছাড়াও বৈঠকে অবৈধ মাদকদ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আশু করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাংগঠনিক কাঠামোকে যুগোপযোগী করার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এক হাজার ৭২২টি পদ সম্বলিত অর্গানোগ্রাম সৃজন প্রয়োজন।
এ লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া গেছে। বর্তমানে বিষয়টি মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের বিবেচনাধীন রয়েছে। এছাড়া অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন প্রদত্ত ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাকে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
কমিটি মাদক চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য ব্যবহার বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করে।
কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কমিটির সদস্য মো. মোজাম্মেল হোসেন, শামসুল হক টুকু, মো. ফরিদুল হক খান, আবুল কালাম আজাদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং কামরুন নাহার চৌধুরী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব সি কিউ কে মোস্তাক, পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।



মন্তব্য চালু নেই