৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা

আগামী ৮ জানুয়ারি শুক্রবার শিল্প নগরী টঙ্গীতে শুরু হচ্ছে দুই পর্বের ৫০তম তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা।

রাজধানী ঢাকার ২০ কিলোমিটার উত্তরে তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য কাজ চলছে।

১৬৬৭ সাল থেকে টঙ্গির তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এর আগে ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর পাগার নামক স্থানে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ছিল।

ইজতেমার আয়োজকরা জানান, ৮ জানুয়ারি প্রথম পর্বের ইজতেমা শুরু হয়ে ১০ জানুয়ারি রবিবার আখেরী মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। চার দিন বিরতির পর ২য় পর্ব শুরু হবে ১৫ জানুয়ারি এবং ১৭ জানুয়ারি আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ৫০তম ইজতেমার সমাপ্তি হবে। ইজতেমায় মুসল্লীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

১৬০ একর বিশাল এলাকা জুড়ে চটের প্যান্ডেল তৈরির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে শত শত লোক স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন। স্বাধীনতা উত্তর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব ইজতেমার ১৬০ একর জমি ইজতেমার ময়দানের জন্য বরাদ্দ দিয়েছিলেন।

১৯৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানটি আধুনিকায়ন করার জন্য কাজ শুরু হয় বলে জাহিদ আহসান রাসেল এমপি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এলাকার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহের ফলে মুসল্লীদের জন্য পানীয় জল এবং পয়নিষ্কাশনের কাজ শুরু হয়। কয়েক দফায় বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের উন্নয়নে প্রায় ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে বলে জাহিদ আহসান রাসেল বাসসকে জানিয়েছেন। প্রতিবছর ১৬০টিরও বেশি মুসলিম দেশে পনের হাজারের বেশি বিদেশী তাবলীগ জামাতের প্রতিনিধি ইজতেমায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাদের জন্য আলাদা ভাবে টিনশেড নির্মাণ করা হয়ে থাকে। ইজতেমা ময়দানে লাখো মুসল্লির ৬ দিনের অবস্থানের উপযোগী গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ, অস্থায়ী ওযু ও গোসলখানা নির্মাণ, মুসল্লিদের নিবিঘেœ যাতায়াত ব্যবস্থা পুর্নবিন্যাসসহ আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করা হয়েছে।

বিশ্ব ইজতেমার মুসল্লিদের সুশৃঙ্খল অবস্থানের জন্য ইজতেমা ময়দানে চটের তৈরি পুরো প্যান্ডেলকে ৪০টি খিত্তায় ভাগ করে বিভিন্ন জেলাওয়ারী মুসল্লিদের অবস্থানের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হবে। আগত মুসল্লিদের চলাচলের জন্য ছাউনির ভিতরের রাস্তা পাকা ও প্রশস্থ করা হয়েছে।

ময়দানের উত্তর পশ্চিম কোণে তুরাগ নদের তীর ঘেষে তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিদেশী মুসল্লিদের জন্য টিন শেডের আন্তর্জাতিক নিবাস। মূল ছাউনির নিচে মধ্যখানে তুরাগ নদের তীর ঘেষে টিন, লোহার পাইপ ও কাঠ দিয়ে মূল বয়ান মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। তুরাগ নদী পারাপারের জন্য সেনাবাহিনী ৮টি ভাসমান পল্টুন ব্রীজ তৈরি করবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় র‌্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যসহ ১৫ হাজার সদস্য ৪ স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। র‌্যাব ও পুলিশের বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। এসব টাওয়ার থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো মাঠ পর্যবেক্ষণ করা হবে।

এছাড়া বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানী ময়দানের আশপাশ এলাকায় অস্থায়ী মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার বসিয়ে মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে বলে ইজতেমার আয়োজক করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই