৭ জেএমবি সদস্য আটক, বিস্ফোরক উদ্ধার

মিরপুর শাহ আলী এলাকায় জঙ্গিদের দখলে নেয়া ৬ তলা ভবনে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান প্রায় শেষের দিকে। এ পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) তিনজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাসহ মোট সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান এখনও চলছে।

ভেতরে আর কোনো জঙ্গি সদস্য নেই। বিস্ফোরক, গোলাবারুদ উদ্ধারে এখনও ওই ভবনটিতে অভিযান চলছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেএমবির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। একজন জঙ্গিকে গতকাল গ্রেপ্তারের পর তার দেয়া তথ্যমতে, এখানে জঙ্গিরা অবস্থান নিয়েছে জানতে পেরে আমাদের গোয়েন্দারা ভোর রাতে অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে ৩ জন জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এটি ছিল একটি হাই প্রোফাইল অপারেশন। সোয়াত টিম আনা হয়েছে। অভিযান শেষ হওয়ার পথে। ঘটনাস্থলে ডিবির ডিসপোজাল টিম এসেছে। তারা সার্চ করছে।’

ইতোপূর্বে হোসনি দালান থেকে যে গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছিল অনেকটা সেই রকমই গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত কেউ আহত হয়নি। কয়েকজন জঙ্গি ভাড়াটিয়া ছদ্মবেশেও বাসা থেকে নেমে যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশ কয়েকটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। আমরা এখনো আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পাইনি। পরে সব জানানো হবে।’

এর আগে মিরপুর শাহ আলী এলাকায় ৬ তলা একটি ভবন দখলে নেয় জঙ্গিরা। বুধবার দিবাগত রাত ১টা থেকে অভিযান শুরু করে পুলিশ। ধারণা করা হয়েছিল, ওই ভবনের বাসিন্দাদের জিম্মি করে রেখেছে জঙ্গিরা। কিন্তু অভিযান শেষে পুলিশ জিম্মির কথা অস্বীকার করেন। সকালে পুলিশ ওই ভবন ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখে। রাস্তা থেকে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেয়।

এর আগে মিরপুর ১-এর (রোড-৯, সেকশন-এ) ওই ভবনের ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়ে জঙ্গিরা। ভবনটি উড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বেই চলে এ অভিযান। ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অভিযানে অংশ নেয় পুলিশের বিশেষ টিম সোয়াতের সদস্যরা। এ ছাড়া র‌্যাবসহ পুলিশ সদস্যরা অংশ নেয় অভিযানে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১টা থেকে পুলিশ এই ভবনের আশপাশে অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তারা ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে।

ডিএমপির মিরপুর জোনের এডিসি সানোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আটককৃত জেএমবি সদস্যদের বয়স ২২ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। চার মাস আগে তারা ওই ভবনে বাসা ভাড়া নেয়।’

কী পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের সার্চ টিম এখনও অভিযান চালাচ্ছে। আসার সময় রান্নাঘরে অবিস্ফোরিত গ্রেনেড দেখেছি। আটকরা জানায়, একটি লোহার ট্রাঙ্কে বেশি কিছু তাজা গ্রেনেড আছে। পুলিশের ডিসপোজাল টিম সতর্কভাবে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছে।’

‘অভিযান শেষ হলে অভিযানে অংশ নেয়া সব টিমের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানা যাবে’, বলেন সানোয়ার।



মন্তব্য চালু নেই