৬ডিসেম্বর, পাকিস্তান হানাদার মুক্ত হয় কলারোয়া

৬ডিসেম্বর। ১৯৭১ এর এ’দিনে পাকিস্তান হানাদারমুক্ত হয় সাতক্ষীরা কলারোয়া। ৯ মাসের রক্তাক্ত সংগ্রামের পর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার ঠিক ১০দিন আগে পাকিস্তান-দোসরদের কালো থাবা থেকে ম্ক্তু হয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এ জনপদটি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষ একাত্তরের আগুনঝরা এইদিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মুক্ত করে কলারোয়াকে। স্বাধীন দেশের পতাকা উড়ে এই মাটির আকাশে। পাকিস্তানী সেনা ও তাদের দোসরদের ধ্বংসযজ্ঞে ক্ষত-বিক্ষত এ’ দিনে মুক্তিকামী মানুষের উল্লাসে মুখরিত হয়। যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক দিনটি এবারও পালিত হচ্ছে।

অযত্ন অবহেলায় সারা বছর এভাবেই থাকে কলারোয়া ফুটবল মাঠের পাশের এই গণকবরটি।
অযত্ন অবহেলায় সারা বছর এভাবেই থাকে কলারোয়া ফুটবল মাঠের পাশের এই গণকবরটি।

উপজেলার ৩৪৩জন বাঙ্গালি বীরসন্তান একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ২৭জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে এ অঞ্চলে প্রবাসী সংগ্রাম পরিষদের সদস্য এমসিএ মমতাজ আহম্মেদ, শেখ আমানুল্লাহ, বিএম নজরুল ইসলাম, কমান্ডার মোসলেম উদ্দীন, শ্যামাপদ শেঠ প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কলারোয়ার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ‘স্বাধীনতা’
কলারোয়ার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ‘স্বাধীনতা’

মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের অধীনে ছিল এই অঞ্চল। পাকিস্তান বাহিনীর আক্রমনে সর্বপ্রথমে শহীদ হন মাহমুদপুর গ্রামের আফছার সরদার। এরপর এপ্রিল মাসে পৌর সদরের বেত্রবতী নদীর ব্রীজের পার্শ্ববর্তী পালপাড়ায় হামলা চালিয়ে নির্মমভাবে ৯জনকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তান বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ পরিচালনা করেন দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দীন ও আব্দুল গফ্ফারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাদের কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে ১৮সেপ্টেম্বর সীমান্তবর্তী বালিয়াডাঙ্গা যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। ওই যুদ্ধে ২৯জন পাকিস্তান সেনা নিহত এবং ১৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এর আগে ১৭সেপ্টেম্বর কাকডাঙ্গার যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমনের মুখে পাকিস্তান সেনারা কাকডাঙ্গা ঘাঁটি ছাড়তে বাধ্য হয়। ২৭আগস্ট চন্দনপুর এলাকা পাকিস্তানবাহিনী মুক্ত হয়। অক্টোবরের শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা শার্শা উপজেলার বাগআচঁড়ায় দু:সাহসিক হামলা চালিয়ে ৭জন পাক রেঞ্জারকে হত্যা করে।

এভাবে একের পর এক সফল অপারেশনের মধ্যে দিয়ে ৭১’র ৬ ডিসেম্বর অকুতোভয় বীর মুক্তিযুদ্ধোরা পাকিস্তান বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করেছিল কলারোয়াকে।



মন্তব্য চালু নেই