৫ বাড়িতে কাজ করে ৮৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে ইন্টার পাস

পেটের টানে ৫ বাড়িতে কাজ করতে হয় ১৭ বছরের শালিনীকে। কিন্তু দারিদ্র্য কেড়ে নিতে পারেনি তার স্বপ্নকে। দমিয়ে রাখতে পারেনি ইচ্ছাকে। নিজের রোজগারের টাকা সংসারে ঢালার পরও দাঁতে দাঁত চেপে চালিয়ে গিয়েছে পড়াশোনা। দৃপ্ত সেই মুখে হাসি ফুটল মঙ্গলবার। ৮৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে আইএসসি (ইন্টারমিডিয়েট) পাশ করেছে ভারতের বেঙ্গালোরের শালিনী।

একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শালিনী জানায়, “আমি বাড়িতে বাড়িতে জামাকাপড় কাচতাম, বাসন মাজতাম।” ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখা শালিনীর বাবা চলৎশক্তি হারিয়েছেন দুর্ঘটনায়। হাসপাতালে কাজ করে, কাপড় কেচে সংসার চালান মা বিজয়া। ছোট ভাই সূর্য ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই পরিবার স্বপ্ন দেখে শালিনীর চোখ দিয়েই।

পাঁচটি বাড়িতে কাজ, পড়াশোনা, কীভাবে সময় ভাগ করতো শালিনী? প্রশ্নের উত্তরে শালিনী বলে, “রোজ ভোর সাড়ে ৪টার সময় ঘুম থেকে উঠতাম। তারপর রঙ্গোলি দিতে যেতাম, সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলতো সেই কাজ। তারপর অন্য একটি বাড়িতে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঘর পরিষ্কার ও কাপড় কাচার কাজ করতাম। তারপর আরেকটি বাড়িতে বাসন মাজা, কাপড় কাচার কাজ করতে করতে বেজে যেত ৯টা। এরপর জলখাবার খেয়ে আরও ২ বাড়ির কাজ। শুধু রাতেই পড়ার সময় পেতাম।”

তামিল মাধ্যমের স্কুলে পড়াশোনা শুরু করে পরে কন্নড় মাধ্যমের স্কুলে ভর্তি হন শালিনী। এরপর ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করল শালিনী। তার মা বিজয়া পড়াশোনা করেছে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত, বাবা নিরক্ষর। কিন্তু তিনিই শালিনীর অনুপ্রেরণা।

মঙ্গলবার পরীক্ষার ফল বেরনোর পর মুখে হাসি ফুটেছে শালিনীর পরিবারের। কিন্তু, লক্ষ্যে স্থির থাকা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শালিনী জানে আসলে কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলো সে।
সূত্র ; জিনিউজ



মন্তব্য চালু নেই