৫ জুন বিজিবিতে যুক্ত হচ্ছেন ৯৭ নারী

৫ জুন (রবিবার) বিজিবিতে প্রথমবারের মতো যুক্ত হচ্ছেন ৯৭ জন নারী সদস্য।

রাজধানীর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দফতরে বৃহস্পতিবার (২ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘টেকনাফ-বেনাপোলসহ যে সব এলাকায় নারী চোরাচালানি রয়েছে সেখানে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। আরও ১০০ জন নারী সদস্যকে আগামী জুলাই থেকে ট্রেনিং দেওয়া হবে।’

চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে বিজিবির সফলতা তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

জুলাইয়ে সীমান্ত ব্যাংক আসছে উল্লেখ করে আজিজ আহমেদ বলেন, ‘শিগগিরই আমরা জামানতের ৪০০ কোটি টাকা জমা দিব। প্রথমে আমরা ৭-১০টি ব্রাঞ্চ চালু করব। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুলাইতে ব্যাংকটি চালু করতে পারব।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি প্রধান বলেন, ‘ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা আর গরু আনব না। ওরাও সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ করুক।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক গরু আসে, আর সব গরুই বিএসএফকে ফাঁকি দিয়ে আসে না। আমরা ভরতের গরুর দিকে তাকানো বন্ধ করলে বছরে একটা দুইটা হত্যাও হবে না।’

গরুর অনুপ্রবেশের বাইরেও কিছু কারণ থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এমন অনেক সীমান্ত এলাকা আছে একটা ঘরের অর্ধেক বাংলাদেশে আর অর্ধেক ভারতে। সে সব এলাকার মানুষজন নিয়মিত দুই দেশে অবাধে যাতায়াত করে। সেখানে দুই দেশের মধ্যে প্রেমঘটিত কারণে কাউকে মেরে ফেললে বা চুরি ডাকাতির ঘটনায় কাউকে পিটিয়ে সাধারণ জনগণ মেরে সীমান্তে ফেলে গেলে তা বন্ধ করা যাবে না।’

তবে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ যৌথ তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রমজানে ভারত থেকে যে কোনো পণ্য আমদানিতে দ্রুত পণ্য ছাড়ের ব্যাপারেবিজিবি সহায়তা করছে উল্লেখ করে বিজিবি প্রধান বলেন, ‘পণ্য আমদানিটা ভালো হলে বাজারমূল্যটা স্বাভাবিক থাকে। বাজার স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব আমাদের না, কিন্তু দ্রুত পণ্য ছাড়ের ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া আছে।’

ক’দিন আগে টেকনাফে আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুটের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সীমান্তের অনেক জায়গা এখনও অরক্ষিত। সে সব জায়গা দিয়ে এসে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এ ব্যাপারে এখনও জানি না। তদন্তের পর বলা যাবে।’

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৯৪৫ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার চাহিদা ছিল। কিন্তু আপাতত ২৮৫ কিলোমিটার জায়গায় বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করি আগামী অর্থবছরে এটা হবে।’

রোহিঙ্গাদের ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে বিজিবির কোনো পদক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে আজিজ আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর বিষয়টা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্তের পর স্বরাষ্ট্র থেকে নির্দেশ আসবে এবং সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা রোহিঙ্গাদের হস্তান্তর করি।’

স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ইয়াবা পাচার হচ্ছে—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইয়াবা পাচার রোধে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সীমাবদ্ধতা নাই, তবে আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কাউকে ধরলে কয়েকদিন পর আবার জামিনে বের হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদেরও ব্যবহার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের স্থলসীমান্তের ৫৩৯ কিলোমিটার অরক্ষিত। এ জুনের পর ১০৯ কিলোমিটার অরক্ষিত থাকবে। আশা করছি আগামী জুনের মধ্যে পুরো স্থলসীমা কাভার হয়ে যাবে।’



মন্তব্য চালু নেই