৪ মাস পর সেই কার্গো জাহাজ উদ্ধার কাজ শুরু

সুন্দরবনে মংলাবন্দরের পশুর চ্যানেলের কাছে কয়লা বোঝাই ডুবে যাওয়ার লাইটারেজ কার্গো জাহাজ এমভি জিয়া-রাজকে নদী থেকে উত্তোলনের কাজ দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস পর বুধবার সকালে শুরু হয়েছে। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজটি ‘নো লস – নো প্রফিট’ ভিত্তিতে নিলামের মাধ্যমে উত্তোলনের নির্দেশ দেয়ায় পর মেসার্স ধলেশ্বরী স্যালভেজ করপোশেন নামের কোম্পানি সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।

তবে নদীতে পানির তীব্র স্রোতে, ডুবন্ত স্থানে প্রচুর বালু ও গাছের গুড়ি থাকার কারণে জাহাজটির উদ্ধার কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও কয়লা বোঝাই লাইটার জাহাজটি দ্রুত উদ্ধার সম্ভব হবে বলে মনে করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক তমিজ উদ্দিন সরকার।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদেশ থেকে আমদানি করা প্রায় ৫১০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে লাইটার কার্গো জাহাজ এমভি জিয়া-রাজ গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাতে মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের সুন্দরবনের জয়মনিরঘোল এলাকায় পশুর নদীতে ডুবে যায়। ঝুঁকির মধ্যে পড়ে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল। এই লাইটার কার্গো ডুবে যাওয়ার সপ্তাহ খানেক পর ডুবন্ত জাহাজ থেকে এক মাস ধরে কয়লা উত্তোলন করা হয়। এরপর থেকে জাহাজটি উদ্ধারে আর কোনো ধরণের তৎপরতা চালায়নি মালিক পক্ষ।

দীর্ঘদিনেও নিমজ্জিত কার্গো জাহাজটি উত্তোলন না করার কারণে সুন্দরবন বিভাগ ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ মালিক পক্ষকে দ্রুত জাহাজটি উত্তোলনের জন্য কয়েক দফা নোটিশও দেয়। কিন্তু তারপরও অজ্ঞাত কারণে মালিক পক্ষ জাহাজটি উত্তোলনে বিরত থাকে। এমতাবস্থায় মংলা বন্দর চ্যানেলকে ঝুঁকিমুক্ত করতে ডুবন্ত ওই জাহাজটি উত্তোলনের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়।

লাইটার কার্গো জাহাজটি উদ্ধারে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘নো লস – নো প্রফিট’ ভিত্তিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স ধলেশ্বরী স্যালভেজ করপোরেশনের সাথে চলতি মাসে চুক্তি করে। শুরু হয় ডুবে যাওয়া লাইটার কার্গো জাহাজটি উদ্ধারে তোড়জোর।

উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ধলেশ্বরী স্যালভেজ করপোরেশনের মালিক তমিজ উদ্দিন সরকার জানান, জাহাজটি অন্তত ২০/২৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। ডুবে যাওয়া থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ মাস সময় পার হওয়ায় এটির মধ্যে কয়েক ফুট বালুর আস্তরণ পড়েছে। বালু খনন করা হলেও সেখানে নতুন করে বালুর আস্তরণ পড়ছে। এ ছাড়া ডুবন্ত স্থানে সুন্দরবনের বিভিন্ন গাছের গুড়ির কারণে উদ্ধার কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। ২০ জন ডুবুরি ও শ্রমিক দিয়ে কার্গোটির উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্গোটিকে পশুরনদী থেকে অপসারণ করা সম্ভব হবে।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মেম্বর (অপারেশন) আলতাফ হোসেন বলেন, ‘নো-লস, নো-প্রফিট’ ভিত্তিতে নিলামের মাধ্যমে দ্রুত ডুবন্ত জাহাজটি উত্তোলনের জন্য মেসার্স ধলেশ্বরী স্যালভেজ করপোরেশন নামক একটি বেসরকারি কোম্পানিকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, সুন্দরবনে কার্গো ডুবির ঘটনায় মংলা থানায় বন বিভাগের দায়ের করা ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মামলার তদন্ত কাজ এখনও শেষ হয়নি।

মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফুর রহমান বলেন, মামলার প্রধান আসামি কার্গো মালিক দিলু খানকে এখনও আটক করা যায়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন। তবে মামলার তদন্ত কাজ দ্রুততার সাথে চলছে বলেও দাবি করেন ওসি।



মন্তব্য চালু নেই