৩দিনেও মোটিভ অনুঘাটিত খৃষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম শহরের গাড়িয়াল পাড়ায় খৃষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীর হত্যাকান্ডের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও খুনের মোটিভ অনুঘাটিত রয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কয়েকটি দল তদন্ত করলেও হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি এখনও। খুনি ধরা না পড়ায় খৃষ্ট্রান সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে উদ্বেগ ও আতংক বিরাজ করছে।

হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সদর থানায় নিহত মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীর ছেলে রাহুল আমিন আজাদ অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ৮ জনকে আটক করে জিঙ্গাসাবাদ করলেও এদের কাছ থেকে খুনের ব্যাপারে মেলেনি কোন তথ্য। বৃহষ্পতিবার ঢাকা থেকে আসা সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন), টিএফআই (টাস্কফোর্স ইন্টোগেশন ইউনিট), কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও র‌্যাবসহ পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা তদন্ত করছেন। তবে তদন্তের বিষয় সম্পর্কে মুখ মুলছেনা কোন পক্ষই।

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জমির উদ্দিন জানান, হত্যাকান্ডের ব্যাপারে জিঙ্গাবাদের জন্য বুধবার রাতে যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছিল, জিঙ্গাসাবাদ শেষে তাদের ৪ জনকে অভিভাবকদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। অন্য এক জনকে ১৫১ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার।

এ দিকে ৩ দিনেও খুনিরা ধরা না পড়ায় কুড়িগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে উদ্বেগ, ভীতি ও আতংক দেখা দিয়েছে। তারা মনে করেন, পরিকল্পিতভাবে জঙ্গিরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কাজেই দ্রুত খুনিদের চিহিৃত করা ও সংখ্যালঘু খিষ্ট্রান সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী তাদের। ধর্মযাজক রেভারেন্ট ফোরকান আল মশীহ্ বলেন, ‘আমরা যেন শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালন করতে পারি সরকারের উচিৎ সে ব্যবস্থা করা’।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে খিষ্ট্রান সম্প্রদায়সহ সকল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্ ানেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি জনসাধারণকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, শান্তির শহরে এ ঘটনা উদ্বেগের হলেও ভয়ের কোন কারন নেই। পরিকল্পিত এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে মনিটরিং করা হচ্ছে। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সার্বিক বিবেচনায় জেলার আইশৃঙ্খা অবস্থা ভাল।

মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে শহরের গাড়িয়ালপাড়ায় বাড়ির সামনে হাঁটাহাঁটি করতে গিয়ে হোসেন আলী দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। তিন মোটর সাইকেল আরোহী এ কিলিং শিশনে অংশ নেয়। ৪ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে নির্বিঘেœ পালিয়ে যায়। মৃত্যু নিশ্চিত হবার পর গ্রেনেড ফাটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে।



মন্তব্য চালু নেই