২০২১ নয়, ২০২৫ সালেও পারবে না বাংলাদেশ

২০২১ নয়, ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে পারবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ওপর আংকটাডের তৈরি ২০১৪ সালের প্রতিবেদন প্রকাশকালে সিপিডির সম্মনিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে এ মূল্যায়ন করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ওপর তৈরি ২০১৪ সালের আংকটাডের প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিপিডি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে হলে প্রথমে ৬ বছরের জন্য সে দেশকে মূল্যায়ন করা হয়। কারণ দেশটির যে অগ্রগতি, তা কতোটা স্থায়ী না ভঙ্গুর সেট পর্যবেক্ষণ করা হয়। তারপরই সে দেশটি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে পারে। ২০১৫ সালে যে দেশগুলোকে এভাবে মূল্যায়নের তালিকায় রাখা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়া হচ্ছে না বাংলাদেশের। তবে বাংলাদেশ সব ধরনের সূচকে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে অগ্রগতি আনলেও ১ দশকের আগে সল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মধ্য আয়ের দেশে খুব সহজেই পৌঁছতে পারি। তাই বলে সেটা আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে নিয়ে অসতে পারবে না। কারণ শুধুমাত্র জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেলেই মধ্য আয়ের দেশে পৌঁছা সম্ভব।’ তাছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হতে আমাদের অপ্রচলিত পদ্ধতিতে বের হয়ে আসা সম্ভব বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি আরো বলেন, ‘তিনটি সূচক রয়েছে- মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদের উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত ভঙ্গুরতা। এ তিনটির প্রথম এবং যে কোনো একটিকে সাথে নিয়ে অন্যদেশগুলো বের হয়ে এলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মানবসম্পদের উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নকে তরান্বিত করার মধ্য দিয়ে এখান থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।’ কারণ বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় নির্ভর করে বের হওয়া খুব কঠিন বলে মনে করেন তিনি।

২০২১ এর মধ্যে এখান থেকে বের না হওয়ার কারণ হিসেবে দেবপ্রিয় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যে পরিমান সহযোগিতা এ দেশগুলো পাওয়ার কথা ছিল তা তারা ঠিকঠাক পায়নি, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। যেখানে এখনো কর্মসংস্থানে কৃষির অবদান ৫০ শতাংশের ওপরে।
এদিকে বাংলাদেশের এখান থেকে বের হতে হলে সবার আগে রপ্তানিতে একটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা না রেখে, অন্য যেসব সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে সেগুলোতে বিশেষ করে নজর দিতে হবে।’ তাছাড়া বাংলাদেশ শ্রমের উৎপাদনশীলতার দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে তুলে ধরা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।

তবে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যাদের অগ্রগতি সববেচেয়ে ভালো তার প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। তাছাড়া সবচেয়ে সফল হচ্ছে রুয়ান্ডা, এরপরের অবস্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ এবং কম্বোডিয়া।

অনুষ্ঠানে আংকটাডের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. গোলাম মোয়জ্জেম, নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহামনসহ আরো অনেকে।



মন্তব্য চালু নেই