১৯৪৫ সালে নয়, ১৯৭১ সালে মারা যান হিটলার!

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পরই আত্মহত্যা করেছিলেন সে সময়কার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাডলফ হিটলার। শুধু তাই নয়, যৌথবাহিনীর হাতে ধরা দেবেন না বলে তিনি ও তার স্ত্রী একসঙ্গেই আত্মহত্যা হয়েছিলেন ১৯৪৫ সালে। তবে এক ইতিহাসবিদ দাবি করেছেন, ওই তথ্যটি সঠিক নয়। আত্মহত্যার নাটক করেছিলেন জার্মানির এই নাৎসিবাদী নেতা। মূলত একটি সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে প্যারাগুয়েতে চলে গিয়েছিলেন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছিলেন হিটলার। সায়নায়েড খেয়ে তার সঙ্গেই আত্মঘাতী হন তার স্ত্রী ইভা ব্রাউন। তারপর তাদের দেহ বাঙ্কার থেকে বের করে এনে কবর দেন তার কর্মীরা। এতদিন পর্যন্ত এই ইতিহাসই জেনে এসেছে সারা বিশ্ব। নতুন ওই ইতিহাসবিদ বলছেন, ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন হিটলার।

ইতিহাসবিদ আবেল বাস্তি জানিয়েছেন, হিটলার কিছুতেই সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে ধরা দেবেন না, তিনি পালিয়ে যাবেন। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছিল। পাশাপাশি অনেক বিজ্ঞানী, সেনা সদস্য ও গোয়েন্দাও তার সঙ্গে পালাবেন বলে ঠিক হয়।

হিটলারের নির্বাসন নিয়ে বাস্তির লেখা বই ‘এল এক্সিলিও ডি হিটলার’ বইয়ের নতুন সংস্করণটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আর্জেন্টিনায়। এই ইতিহাসবিদ মনে করেন, বার্লিনের সেই ঐতিহাসিক বাঙ্কার থেকে সুড়ঙ্গপথে গোপনে টেম্পেলহফ বিমানবন্দরে পৌঁছন হিটলার। সেখানেই তার জন্য অপেক্ষা করে ছিল একটি নৌকা। তাতে চড়েই তিনি চলে যান আর্জেন্টিনা।

সেখানে প্রায় এক দশক থাকার পর প্যারাগুয়েতে যান স্বৈরতন্ত্রী এই শাসক। সেখানকার প্রেসিডেন্ট অ্যালফ্রেডো স্ট্রোসনার ছিলেন জার্মান বংশোদ্ভূত। তিনিই নিরাপদ আশ্রয় দেন হিটলারকে। সেখানেই ১৯৭১ সালে তার মৃত্যু হয় বলে মত বাস্তির।

আর বাস্তির মতকে সত্যি বলে দাবি করেছেন প্রবীণ সিআইএ এজেন্ট বব বেয়ার। হিটলার যে পালিয়ে গিয়েছিলেন ও আত্মহত্যার নাটক করেছিলেন তার প্রমাণও তার কাছে আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। জানুয়ারি মাসে একটি হিস্ট্রি চ্যানেলে তিনি ও তার দল হিটলারকে নিয়ে প্রকাশ হওয়া ৭০০ পাতার তথ্যসমৃদ্ধ ফাইল পর্যালোচনা করেছিলেন।

প্রকাশিত তথ্যের একটি অংশে লেখা ছিল, ‘জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা হিটলারের দেহ খুঁজে পাননি। এমনকি কোনো বিশ্বস্ত সূত্রও দাবি করতে পারেনি যে হিটলারের মৃত্যু হয়েছে।’ হিটলারের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ পায় ২০০৯ সালেই। মার্কিন গবেষকরা সেসময় দাবি করেছিলেন, যে করোটির অংশটি হিটলারের বলে মনে করা হয়, তার ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেটি কোনো অজ্ঞাতপরিচয় নারীর করোটি।

ধারণা করা হয়, বুলেটে ছিন্নভিন্ন করোটির সেই অংশটি হিটলারের বাঙ্কার থেকে উদ্ধার করেছিলেন রুশরা। ২০০০ সালে মস্কোতে সেটি প্রকাশ্যে আনা হয়। হিটলারের আত্মহত্যার প্রমাণ হিসেবে সেটিকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরা হয়। হিটলারের জীবনী লেখক ওয়ার্নার মেসারও ওই অংশটি হিটলারের নয় বলে দাবি করেছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই