১৮৮০ সাল থেকে আজও যারা বেঁচে

বিশ্বে প্রতিমুহূর্তে নিয়মিত মানুষ জন্মগ্রহন করছে এবং মারা যাচ্ছে। বিশ্বসংস্থা জাতিসংঘের এক হিসেব মতে, বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে চারজন মানবসন্তান জন্মায় এবং মারা যায় দুইজন। সেই হিসেবে প্রতিমিনিটে ২৫০ জন নতুন জনসংখ্যা যোগ হচ্ছে এবং বিয়োগ হচ্ছে ১০৫ জন মানুষ। মানুষের এই যোগ-বিয়োগের পালা মানবসৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই চলে আসছে। প্রাচ্যের প্রাচীন দর্শণ মতে, এক প্রাণের মৃত্যুর ভেতর দিয়ে অপর এক প্রাণের পৃথিবীতে প্রবেশের রাস্তা উন্মোচিত হয়। যদিও বিজ্ঞান এই কথা মানতে নারাজ। কিন্তু সমগ্র মানবজাতিকে যদি অন্য সকল প্রাণীর মতোই দেখা যায়, তাহলে প্রাচ্যের সেই দর্শণ খুব বেশি একটা ভুল বলেনি।

পৃথিবীতে এখন খুব বেশি বয়স্ক মানুষ বেঁচে নেই যাদের বয়স একশ পার হয়ে গেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম হাফিংটন পোষ্ট এমনি চারজন বয়স্ক ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করেছেন যারা ১৮৮০ সাল পরবর্তী সময়ে জন্মেও এখনও দিব্যি বেঁচে আছেন। উল্লেখ্য, ১৮৮০ সালের আগে জন্মানো এমন কোনো ব্যাক্তি আর পৃথিবীতে বেঁচে নেই। বয়স্কদের এই তালিকায় যেমন প্রাচ্যের মানুষ আছে তেমনি আছে ইউরোপেরও। পাঠকদের জন্য  সেই বয়স্ক চারজনের পরিচয় তুলে ধরা হলো।
Gertrude-Weaver,-116,-Arkansasজেরতুর্দে ওয়েভার, ১১৬, আরকানসাস: গত বছরের জুলাই মাসের ৪ তারিখ ইউরোপের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যাক্তির ১১৬তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। জেরতুর্দে ওয়েভারের ভাষ্য মতে, দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সূত্র হলো ‘বিশ্বাস’। মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাসই মানুষকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারে। ইউরোপের এই অশীতিপর বৃদ্ধ এখনও বেশ হাসিখুশিতেই বেঁচে আছেন। জীবন এখনও তার কাছে বিপুল আনন্দময়।
jiজেরালিন তাল্লি, ১১৫, মিশিগান: তাল্লি অন্য সব বয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি কর্মক্ষম। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি এখন তার নাতনীর সঙ্গেই মিশিগানে থাকেন। এই বয়সেও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে খেলা করা, মাছ ধরতে যাওয়ার মতো রোমাঞ্ছ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেন না নিজেকে। অন্যদের মতো তারও আছে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার গোপন রহস্য। অবশ্য তার ভাষায়, ‘অন্যকে সুখী করার আগে নিজেকে সুখী করতে পারলেই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা যায়। জীবনকে সঠিকভাবে বাঁচতে দিতে হয়। তাইলেই এই শরীর দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে।’
Jeralean-Talley,-115,-Michiganসুসানা মুছহাট জোনস, ১১৫, নিউইয়র্ক: আজও ফাস্টফুড তার পছন্দের খাদ্যতালিকার অন্যতম উপাদান। বেকন আর সেদ্ধ ডিম না হলে প্রতিদিন সকালের নাস্তা জমে না জোনসের। গ্লুকোমার কারণে তার দৃষ্টিশক্তি কিছুটা ক্ষীণ হয়ে গেছে সত্যি। কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতা আমলে নিতে রাজি নন জোনস। ‘রঙিন জামা-কাপড় সবসময় পরিধান করলে মন কখনও বুড়িয়ে যায় না। আর মন বুড়িয়ে না গেলে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা কোনো ঘটনাই না’।
Emma-Morano-Martinuzzi,-115,-Italyইমা মোরানো মার্টিনুজ্জি, ১১৫, ইতালি: মাফিয়াদের স্বর্গে বাস করেও দিব্যি ১১৫ বছর ধরে বেঁচে আছেন মার্টিনুজ্জি। তার বিশ বছর বয়সে একবার শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়ে। তখন সেই ডাক্তার তাকে নিয়মিত ডিম খাওয়ার কথা বললে তিনি গোটা জীবনই নিয়ম করে ডিম খেয়ে যান। তাই নিয়ম করে খাওয়া-দাওয়া এবং স্বল্পাহারী হওয়াকেই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার উপায় বলে মনে করেন তিনি। প্রতিদিন সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে ওঠে যাওয়া মার্টিনুজ্জি এখনও অনেকটা হেটেও ক্লান্ত হন না।

হাতে হাত



মন্তব্য চালু নেই