১৩ মাস পর কবর থেকে কলেজছাত্রীর মরদেহ উত্তোলন

আদালতের নির্দেশে দাফনের ১৩ মাস পর গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শারমিন সরকারের (১৮) মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জোলারপাড় এলাকার পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

নিহত শারমিন সরকার জোলারপাড় এলাকার মো. আব্দুর রাজ্জাক সরকারের মেয়ে।

মরদেহ উত্তোলনের সময় গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পারসিয়া সুলতানা, মো. মামুন শিবলী ও মো. রাসেল মিয়া, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. সোহরাব হোসেন এবং জয়দেবপুর থানা সদরের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

নিহতের মা মোছা. সুফিয়া সরকার জানান, গত বছর ৩০ মে চিকিৎসার জন্য ঢাকার উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ খানকে দেখান। তার পরামর্শে ৩ জুন ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং পর দিন তার অপারেশন করা হয়।

শারমিনের মায়ের অভিযোগ, অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ খান তার মেয়ের অপারেশন নিজে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও অপারেশনের সময় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তার সহকারী আবুল হোসেনকে দিয়ে অপারেশন করান। অপারেশনের প্রি-অপারেটিভ চেকআপ, এনেসথেসিয়া করার সময় যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি।

একপর্যায়ে তার ভুল চিকিৎসা ও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে তার মেয়ের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। এতে তার মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে গত বছরের ১৩ জুন শারমিন মারা যায়। এরপর শারমিনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ওই হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ খান ও তার সহকারী মো. আবুল হোসেন, এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এমএ করিম, একই বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. ফাইজুর ইসলাম চৌধুরীকে আসামি করে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা সদরে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে শারমিনের মা মোছা. সুফিয়া সরকার ওই চার চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। পরে কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে চার চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. সোহরাব হোসেন জানান, ঢাকার সিএমএম আদালতের নির্দেশক্রমে ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে শারমিনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই