১৩০ বছর পর পাওয়া গেল সেই গেছো ব্যাঙ

বিজ্ঞানীদের ধারণা, দেখতে সুন্দর এক প্রজাতির গেছো ব্যাঙ ১০০ বছরের বেশি সময় আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই ব্যাঙ আবার দেখা গেছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গলে পাওয়া গেছে বিলুপ্ত প্রজাতির এই গেছো ব্যাঙ। ভারতের প্রখ্যাত জীববিজ্ঞানী সত্যভামা দাস বিজুর নেতৃত্বে একটি গবেষণাদল ব্যাঙটি আবিষ্কার করেন।

এখন আশা করা হচ্ছে, শুধু ভারত নয়, আরো বৃহৎ এলাকায় অর্থাৎ চীন থেকে থাইল্যান্ড পর্যন্ত এই ব্যাঙের দেখা মিলতে পারে। এ নিয়ে গবেষণাকারী বিজ্ঞানীরা আবিষ্কারকৃত ব্যাঙকে পৃথিবীতে পাওয়া সম্পূর্ণ নতুন গোত্রের (জীববিজ্ঞানের ভাষায় গণ) ব্যাঙ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যদিও এই গণের ব্যাঙ ১৩০ বছর আগে পৃথিবীতে ছিল এবং এখনো আছে। মধ্যবর্তী এই সময়ে এই গণের ব্যাঙ মানুষের দৃষ্টিগোচর না হওয়ায়, তা বিলুপ্তির তালিকায় চলে গিয়েছিল।

গল্ফ বলের আকৃতির এই ব্যাঙ গাছে বসবাস করে। সাধারণত ছয় মিটার উঁচুতে গাছের কোটরে এরা বসবাস করে। হয়তো এ কারণে এতদিন মানুষের চোখে পড়েনি এরা।

কোনো কোনো বিজ্ঞানী আবার বলছেন, এরা হয়তো কখনোই বিলুপ্ত হয়নি। এদের নিয়ে গবেষণার অভাবে হয়তো চোখ এড়িয়ে গেছে। কারণ খুবই সামান্যসংখ্যক বিজ্ঞানী প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করেন।

এরা শুধু যে উঁচু গাছের কোটরে বসবাস করে, তা-ই নয়। পুরুষ ব্যাঙের সঙ্গে পানিভর্তি কোটরে অবস্থান করার সময় স্ত্রী ব্যাঙ ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বাচ্চা ফোঁটানোর পর এরা বাইরে আসে। যে কারণে চোখে পড়ে কম।

এদের খবার অন্য অধিকাংশ ব্যাঙের চেয়ে আলাদা বলা যায়। এরা লতাপতা খেতে পছন্দ করে। অন্য ব্যাঙ যেখানে পোকামাকড় ও শুঁয়া পোকা খেয়ে থাকে।

নতুন গোত্রের এই ব্যাঙ ২০০৭ সালে অন্য প্রাণীর সন্ধানের সময় আকস্মিকভাবে পাওয়া যায়।

দিল্লি বিশ্বদ্যিালয়ের প্রফেসর বিজুকে ভারতের ব্যাঙ মানব (দ্য ফ্রগ ম্যান) বলা হয়। ভারতের ৩৫০ বা তার বেশি প্রজাতির ব্যাঙের মধ্যে তিনি একাই ৮৯ প্রজাতির ব্যাঙ খুঁজে বের করেছেন।

ডিএনএ বিশ্লেষণ শেষে বিজ্ঞানী বিজু ও তার সহকর্মীরা নিশ্চিত হয়েছেন, এটি সম্পূর্ণ নতুন গোত্রের ব্যাঙ, যার নামও হবে নতুন।

আগে ব্যাঙটির বৈজ্ঞানিক নাম ছিল পলিপিডেটস জেরডনি। থমাস জেরডনি নামে একজন ব্রিটিশ প্রাণীবিজ্ঞানী ১৮৭০ একটি নমুনা ব্যাঙ আবিষ্কার করেন। কিন্তু এখন এর সম্পূর্ণ নতুন নামকরণ করা হবে।

তবে বিজ্ঞানী বিজু সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, ক্রান্তীয় বনাঞ্চল যেভাবে উজাড় হয়ে যাচ্ছে, তাতে এই ব্যাঙ হয়তো সত্যি সত্যিই একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন।



মন্তব্য চালু নেই