১৩০ কোটি বছরের পুরনো পায়ের ছাপ আবিষ্কার!

অস্ট্রেলিয়ার ব্রুমস কেবল বিচে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন বিন্দি লি পোর্ট। মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে মা ও মেয়ে হঠাতই হোঁচট খান বিন্দি।

তখনই চোখে পড়ে অদ্ভুত কিছু গর্ত। দেখেই তারা বুঝতে পারেন এটা নিঃসন্দেহে বৃহৎ কোনো প্রাণীর পায়ের ছাপ। কিন্তু এত বড় প্রাণী এখন আছে পৃথিবীতে?

মাপে তার নিজের পায়ের প্রায় দ্বিগুণ। এবং সেটি একটি-দুটি নয়। কেবল বিচ বরাবর অনেকখানি জায়গা জুড়ে কাদার উপর এমন গভীর পায়ের ছাপ ছড়িয়ে রয়েছে অনেক দূর পর্যন্ত।

বিন্দি বুঝতে পারলেন এটা সাধারণ কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু এটা বুঝতে পারেননি যে তিনি ও তার মেয়ে কত বড় একটা আবিষ্কার করে ফেলেছেন!

এখন প্রশ্ন, কেবল বিচে কী এমন জন্তু ঘোরাফেরা করে, যাদের পায়ের ছাপ এত বিশাল?

এই রহস্যের উদ্ঘাটন করলেন কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ ডক্টর সালিসবারি। কেবল বিচে এমন পায়ের ছাপের সন্ধান পেয়ে তার গবেষণার নতুন দিশা পেল বলে মনে করছেন তিনি।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কিম্বারলে রিজিয়নে অনেক বছর ধরে ডাইনোসরের ফুট প্রিন্ট নিয়ে গবেষণা করছেন। তাই বিন্দি লি’র এই আবিষ্কারে তিনি আপ্লুত।

সালিসবারি জানান, এই পায়ের ছাপগুলোর ১৩০ কোটি বছর আগেকার। আর সে সময় পৃথিবীতে ডাইনোসরেরই অস্তিত্ব ছিল। তবে এগুলো মাঝারি মাপের থেরোপড ডাইনোসরের পায়ের জীবাশ্ম হবে বলে মনে করছেন সালিসবারি।

কেমন দেখতে ছিল এই থেরোপড ডাইনোসর? তার মতে, মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত এই ডাইনোসরেরা ছিল ৫ মিটার লম্বা। টাইরানোসরাসের মতো বড় না হলেও এরা মাংসাশী ছিল বলে জানান তিনি।

যে পায়ের জীবাশ্ম মিলেছে সেগুলো ১-১.৬ ফুট লম্বা। এ ধরনের জীবাশ্মকে বলা হয় মেগালোসরোপাস ব্রুমেনসিস।

সালিসবারি আরও জানিয়েছেন, কেবল বিচে পায়ের ছাপগুলো ২০-৩০ বছর ধরে বালির তলায় ছিল, সমুদ্রের ঢেউয়ে আস্তে আস্তে বালির স্তর সরে গিয়ে এগুলো প্রকাশ পাচ্ছে।

তবে আবিষ্কারক বিন্দি লি পোর্ট তো আপ্তুত। স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি এইভাবে ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার করে ফেলবেন। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর তো রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে গেছেন। বিন্দি এখন ভেসে যাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার জোয়ারে। -আনন্দবাজার



মন্তব্য চালু নেই