১২ ঘণ্টায় সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো ৮ প্রাণ

দেশের দুই জেলায় মাত্র ১২ ঘন্টায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে আটজন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩১ জন। শনিবার থেকে রোববার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের শিলন্দা ও কামারখন্দের বালুকোল এলাকায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়েসহ চারজন নিহত হয়েছে।

শনিবার রাত আটটার দিকে সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের শিলন্দা শিমুলতলা এলাকায় বাসচাপায় মা-মেয়েসহ তিন অটোরিক্সার যাত্রী নিহত হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কের বালুকোল এলাকায় অজ্ঞাত যানবাহনের চাপায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন, ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার কালিয়াকান্দা গ্রামের আজিজল হক মসলিমের ছেলে আবু কাওসার (২৯), তার শ্যালক কামারখন্দের মুগবেলাই গ্রামের মোহনের স্ত্রী উর্মি খাতুন (২০) ও তাদের শিশু সন্তান মোহিনী (দেড় বছর)।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানান, রাত ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে নলকাগামী একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা শিলন্দা শিমুলতলা এলাকায় পৌছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই আবু কাওসার ও শিশু মোহিনী মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল পৌছে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উর্মি খাতুন মারা যান।

অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঝাঐল ওভারব্রীজ এলাকায় বাসের ছাদ থেকে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধ পড়ে গেলে তাৎক্ষণিক অপর একটি যানবাহনের চাপায় পিষ্ট হয়ে মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

এদিকে নরসিংদী প্রতিনিধি জনান, জেলার শিবপুরে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছে। এদুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ছয়জন। তাৎক্ষনিক নিহতদের পরিচয় জানা জায়নি। রোববার (১৬ এপ্রিল) সকালে কুন্ডারপারা নামক স্থানে এদুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, রাজধানীর আব্দুল্লাপুর থেকে একটি প্রাইভেটকার ও সিলেটের উদ্দেশ্যে একটি মাইক্রোবাস কুন্ডারপারা নামক স্থানে এসলে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থালে একজন যাত্রী নিহত হয়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বাকিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জনান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী বহনকারী ভাড়ায়চালিত শানে খোদা নামে একটি বাসের সঙ্গে গড়াই পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানে গেছে।

আহতদের কুষ্টিয়া সদর হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের ভাদালিয়া বাজারসংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কুষ্টিয়া সদর থানা পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ৮টার ট্রিপের ক্যাম্পাসের একটি বাস কুষ্টিয়া যাচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা ওই গাড়িতে ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষার্থী, স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রী ছিলেন। বিত্তিপাড়া বাজার পার হওয়ার পর গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়।

এ সময় ড্রাইভার গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিপরীত দিক থেকে আসা কুষ্টিয়া-খুলনা রুটে চলাচলকারী গড়াই পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ গাড়ির ড্রাইভার গুরুতর আহত হন। এ ছাড়াও গড়াই পরিবহনের ২২ জন যাত্রী আহত হন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।



মন্তব্য চালু নেই