আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা

১১ আসামির খালাসের রায় আপিলে বহাল

গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে খালাস করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দেন। এর ফলে হাইকোর্টের খালাসের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খালাস পাওয়া এই ১১ আসামি এখন কারাগার থেকে বের হতে পারবেন।

এর আগে গত ২১ জুন আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে খালাস করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া ১১ আসামি হলেন আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনির।

গত ১৫ জুন আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। অপরদিকে ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু, মাহবুবুর রহমান, কানা হাফিজ, সোহাগ, শহিদুল ইসলাম শিপু।

যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আট আসামি হলেন মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ আহমদ হোসেন মজনু, আনোয়ার হোসেন আনু, বড় রতন, ছোট জাহাঙ্গীর, আবদুস সালাম, মশিউর মিশু। অন্যদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। তার সঙ্গে খুন হন ওমর ফারুক রতন নামে আরেকজন।

মুক্তিযোদ্ধা, আহসান উল্লাহ মাস্টার ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে টঙ্গী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি গাজীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুর পর এখন তার ছেলে জাহিদ আহসান রাসেল ওই আসনের সংসদ সদস্য।

ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে এই মামলায় ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ জন এবং আসামিপক্ষে দুজন সাক্ষ্য দেন।

এই মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান অন্য দুজন।



মন্তব্য চালু নেই