১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে সাড়ে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ ৯ পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায় সোনারগাঁও থানার এসআই আমিনুল, আব্দুল লতিফ ও কনস্টেবলসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে সাড়ে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী।

রোববার রাতে উপজেলার মিরেরবাগের কাউছার টেক্সটাইল নামক একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা চাঁদা দাবি করতে গেলে সেখানে তাদেরকে সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী।

খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ- অঞ্চল) সাজিদুর রহমান ও সোনারগাঁও থানার পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম ওবায়েদুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী জানায়, সোনারগাঁও থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ও আব্দুল লতিফ তাদের সঙ্গে দুই কনস্টেবল নিয়ে সাদা পোশাকে রোববার সন্ধ্যায় মিরেরবাগ এলাকায় কাউছার টেক্সটাইল নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের আশপাশে অবস্থান নেয়। এসময় স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতা হিমেলের স্ত্রী রুমা আক্তারকে ওই শিল্পকারখানার ভেতরে পাঠিয়ে শিল্প মালিক বিল্লাল হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। পরে এসআই আমিনুল ও আব্দুল লতিফ দুই কনস্টেবল ও স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান হাবিব, মিঠু, গোলজার, জয়নালকে সঙ্গে নিয়ে ওই শিল্পকারখানার ভেতরে জোরপূর্বক প্রবেশ করেন।

এক পর্যায়ে কারখানা মালিক বিল্লাল হোসেনকে আটক করে মারধর করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মারধরের শিকার হয়ে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করেন। বিল্লাহ হোসেনের চিৎকার শুনতে পেয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে নিজেরা একত্রিত হন এবং কারখানার চারপাশে অবস্থান নেন। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কারখানার ভেতরে পুলিশ সদস্য ও সন্ত্রাসীরা। অবরুদ্ধদের মধ্যে দুইজন নিজেকে থানা পুলিশের এসআই ও দুই জন কনস্টেবল বলে দাবি করেন। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাদেরকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে আটক করে রাখেন।

এদিকে পুলিশ সদস্য অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) সাজিদুর রহমান ও সোনারগাঁও থানার পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম ওবায়েদুল হক রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদকবিরোধী আন্দোলন করে আসছিলেন। সম্প্রতি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী হিমেল মাদকসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় বিল্লালের স্ত্রী ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে অসাধু পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় বিল্লালকে মারধর করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়।

জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য সুজন মিয়া জানান, সন্ত্রাসীদের নিয়ে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা টাকার দাবিতে ব্যবসায়ী বিল্লালকে মারধর করায় এলাকাবাসী ডাকাত সন্দেহে তাদেরকে অবরুদ্ধ করেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(খ-অঞ্চল) সাজিদুর রহমান বলেন, পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই