হ্যাপির ধর্ষণ মামলায় রুবেলের অব্যাহতির শুনানি আজ

জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে চিত্রনায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপির ধর্ষণ মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের রুবেলের অব্যাহতি আবেদনের ওপর আজ শুনানি হবার কথা রয়েছে।

রোববার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক তানজিনা ইসলামের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে। ১৯ এপ্রিল বিচারক এ দিন ধার্য করেন এবং শুনানির দিন বাদী ও আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মামলার বাদী হ্যাপির মতামতের ওপর নির্ভর করছে এ মামলায় ভবিষ্যতে করনীয় কি হবে। এ প্রতিবেদনের ওপর হ্যাপি যদি নারাজি আবেদন করেন তাহলে মামলাটির আবার তদন্ত শুরু হবে। যদি নারাজি কোনো আবেদন না করেন তাহলে মামলাটি এখানে অচল হয়ে যাবে। অব্যাহতি পাবেন রুবেল।

গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা মহানগর হাকিম (এমএম) আতাউল হক চূড়ান্ত অভিযোগপত্রটি স্বাক্ষর করে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার সাহার (সিএমএম)আদালতে পাঠালে বিচারক মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ স্থানান্তর করেন।

এর আগে ২৯ মার্চ ঢাকা মোট্রোপলিটন পুলিশের উইমেন সাপোর্টএ্য অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক হালিমা খাতুন আসামি রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালতের মিরপুরের জিআর শাখায় মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দানের চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, নাজনীন আক্তার হ্যাপি প্রাপ্তবয়স্ক, মিডিয়াতে কাজ করা একজন সচেতন আধুনিক ব্যক্তি। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া তিনি যদি রুবেলের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে থাকেন তাহলে সেটা তার সম্মতিসহ হয়ে থাকতে পারে। ধর্ষণের সংজ্ঞানুযায়ী বিবাহের প্রলোভন দিয়ে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে তার কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তদন্তে রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাই এ মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দানের প্রার্থনা জানান বলে উল্লেখ করেন।

গত ১১ জানুয়ারি তিন দিন কারাবাসের পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস রুবেলকে জামিনের আদেশ দেন। আদালত আদেশে বলেন, পুলিশ প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত রুবেল হোসেনকে জামিন প্রদান করা হলো। এরপর রুবেল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে যোগ দেন এবং ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলতে দেশের বাইরে যান।

হাইকোর্ট থেকে নেওয়া আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হলে গত ৮ জানুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর করে রুবেলকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন আদালত।

এর আগে ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ এবি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাকে এ মামলায় চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর নাজনীন আক্তার হ্যাপি মিরপুর মডেল থানায় অভিযোগ করেন- ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে রুবেল হ্যাপির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে। নবাগত এ নায়িকা ‘কিছু আশা কিছু ভালবাসা’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়া তার কয়েকটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী।



মন্তব্য চালু নেই