ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের রায়

হিজড়া সম্প্রদায় আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি পেল

ভারতের সুপ্রিমকোর্ট সে দেশের হিজড়া সম্প্রদায়কে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে সেখানে হিজড়াদেরকে পুরুষ বা নারী হিসেবে তাদের পরিচয় উল্লেখ করতে হতো। ভারতে এই প্রথম হিজড়া সম্প্রদায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের লিঙ্গ পরিচয় পেয়েছে।

সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে হিজড়াদের বিষয়ে নির্দেশ দিল। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে হিজড়াদের শিক্ষা,স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানে সমান অধিকার দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই ঐতিহাসিক রায়ের পর উত্‍সবে মাতলেন রূপান্তরকামী বা হিজড়ারা। সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানায়, হিজড়াদেরকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর মনে করা হয়। কোর্ট জানায়, হিজড়ারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে এবং তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে তারাও চাকরি পাবে। আদালত আরো বলেছে, তাদের জন্য বিশেষ কল্যাণ তহবিল গঠন করা হবে এবং সামাজিক নেতিবাচক আচরণ থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য প্রচারণা চালানো হবে।

গত বছর এক রায়ে সমকামিতাকে অপরাধ বলেই গণ্য করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারা অনুযায়ী সমকামিতা দন্ডনীয় অপরাধ। যতক্ষণ না সংসদ আইন করে এই ধারা লোপ করছে ততক্ষণ সমকামিতা আইনত অপরাধই থাকছে। বলে জানানো হয়েছিল

এর আগে ২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট ৩৭৭ ধারার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল। ওই রায়ে বলা হয়েছিল ভারতীয় দন্ডবিধির এই ধারাটি বৈষ্যমূলক এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়ের সুবাদেই সমকামী এবং রূপান্তরকামীরা তাঁদের অধিকার অর্জনের পথে এগিয়েছিলেন বলে দাবি করতেন। সুপ্রিম কোর্টের আজকের এই বক্তব্য সেই এলজিবিটি আন্দোলনকারীদের পক্ষে বড় ধাক্কা।

শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ বলে, “৩৭৭ ধারা বাতিল নয়। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী সমকামিতা দণ্ডনীয় অপরাধ, সাজা হতে পারে যাবজ্জীবন পর্যন্ত।”

এদিকে ২০১৩ সালের ১১ই নভেম্বর হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এই স্বীকৃতির ফলে পাসপোর্টসহ সব ধরনের সরকারি নথিপত্রে ব্যক্তির লিঙ্গ পরিচয় হিসেবে ‘নারী’ ও ’পুরুষের’ পাশাপাশি ‘হিজড়া’ হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ থাকবে। সম্প্রতি জার্মানীও তৃতীয় লিঙ্গকে স্বীকৃতি দিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই