হারানো স্ত্রীকে খুঁজে দিল হোয়াটসঅ্যাপ

ফেসবুক-হোয়াটস অ্যাপে পাতা ফাঁদে পা দিয়ে সমস্যায় জড়িয়েছেন হাজারো মানুষ৷ যার জেরে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের কুখ্যাতিও কম নয়৷ কিন্তু এই ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের কল্যাণেই পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিল হারিয়ে যাওয়া এক মহিলাকে৷

গত ১৫ জুলাই রাজস্থান থেকে আগ্রার উদ্দেশ্যে রওনা দেন কল্পনা জৈন নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা৷ কিন্তু ভুল ট্রেনে চেপে শেষে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে এসে পৌঁছন তিনি৷ গত ১৮ জুলাই রাতে বালুরঘাট পুরসভা মোড়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাঁকে৷ তাঁর গতিবিধি দেখে স্থানীয় মানুষের মধ্যে সন্দেহ জাগে৷ সেই সময় ওখানে আড্ডা দিচ্ছিল কয়েকজন যুবক৷কল্পনাদেবীর সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানা যায়, তাঁর বাড়ি রাজস্থানের আজমের জেলার শান্তিনগর থানার আশাগঞ্জে৷ এর পরেই তাঁরা বালুরঘাট থানায় খবর দেন৷ পুলিশের সাহায্যে কল্পনাদেবীকে হাসপাতালে ভরতি করেন ওই যুবকরা৷

উদ্ধারকারী ওই যুবকরা শুধু কল্পনাদেবীকে হাসপাতালে ভরতি করিয়েই ক্ষান্ত হননি। নিজেদের মোবাইলে কল্পনাদেবীর ছবি তুলে তা হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। যাতে কল্পনাদেবীর পরিবার বা আত্মীয়-স্বজন তাঁর সন্ধান পেয়ে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন৷ সোশ্যাল মিডিয়ার আশীর্বাদে শেষ পর্যন্ত তাঁরা সফলতাও পান৷ ফেসবুক ও হোয়াটস-অ্যাপ গ্রুপে কল্পনাদেবীর ছবি দেখতে পান তাঁর স্বামী বিজয় জৈন৷ এর পর পুলিশের সাহায্য নিয়ে বালুরঘাটে এসে ওই যুবকদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি৷শুক্রবার দুপুরে তাঁর স্ত্রী কল্পনা জৈনকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যান বিজয়বাবু৷

বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল থেকে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় বিজয় জৈন জানান, কল্পনাদেবী নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে খুঁজেছেন তিনি৷অনেক খোঁজাখুজির পরও স্ত্রীর সন্ধান না পেয়ে অবশেষে কেশোরগঞ্জ থানায় একটি মিসিং ডাইরি দায়ের করেন৷ কল্পনাদেবী নিখোঁজ হওয়ার পর প্রতিটি দিন উৎকণ্ঠা আর দুশ্চিন্তার মধ্যে কেটেছে তাঁর৷ আচমকাই হোয়াটস অ্যাপ আর ফেসবুকের মাধ্যমে বালুরঘাট থেকে তাঁর স্ত্রীর আপলোড করা ছবি দেখতে পেয়ে ধরে যেন প্রাণ আসে তাঁর৷ সঙ্গে সঙ্গে কেশরগঞ্জ থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে বালুরঘাটে আসেন তিনি৷ স্ত্রীর উপযুক্ত প্রমাণ পত্র দাখিল করে বালুরঘাট থানার পুলিশের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যান৷

হারিয়ে যাওয়া একজন অসহায় মহিলাকে তাঁর স্বামীর ও পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে তাঁরাও ভীষণ খুশি বলে জানান ওই যুবকদের একজন মহেশ পারেখ৷



মন্তব্য চালু নেই