বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ

হাফিজের ডাবল সেঞ্চুরিতে ব্যাক ফুটে বাংলাদেশ

এর আগে দুবার হতাশায় পুড়তে হয়েছে তাকে। একবার করেছিলেন ১৯৬। আরেকবার ১৯৭। দুবারই ডাবল সেঞ্চুরির খুব কাছ থেকে ঘুরে এসেছেন। শেষ স্মৃতিতটা গেলো বছরের নভেম্বরের। আরো একবার একই হতাশায় পুড়তে চাননি বলে খুব সতর্কতাই দেখিয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ। টেস্টে দারুণ ফর্মে থাকা এই পাকিস্তানী খেলোয়াড় খুলনা টেস্টের তৃতীয় দিনে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ২৮৬ বল খেলে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন হাফিজ। আর এই ইনিংস সাজানো ২১টি চার ও ৩টি ছক্কায়। তার ইনিংসে ভর করে রানের পাহাড়ে ওঠার পথ দেখতে পাচ্ছে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে এখন পাকিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৫২ রান। লিড ২০ রানের। হাফিজ ২০০ এবং অধিনায়ক মিসবাহ ৭ রানে ব্যাট করছেন। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিলো ৩৩২ রান। এখন টাইগাররা ব্যঅক ফুটেই।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম সেশনটা একটু ভয়ের থাকে ব্যাটসম্যানদের জন্য। তার চেয়ে ভয়ের থাকে প্রথম ঘণ্টাটা। এই প্রথম ঘণ্টায় কোনো দল বোলিংয়ে ভালো করতে পারলে ব্যাটসম্যানদের কঠিন সময় পার করতে হয়। কিন্তু খুলনা টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টার মতো প্রথম সেশনের পুরোটাই পাকিস্তান কাটিয়েছে আরামে। প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়েই এদিনের খেলা খেলতে নেমেছেন হাফিজ। আর বাংলাদেশী বোলাররা একটু ভুল করলে কিংবা একটু শর্ট বল দিলেই তার মাশুলটা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন হাফিজ। স্বাগতিক বোলারদের তাই সতর্ক না হয়ে উপায় থাকেনি।
মুশফিকুর রহিম এদিন হাতের ব্যথার কারনে মাঠে নামতে পারেন নি। তার জায়গায় সহ অধিনায়ক তামিম ইকবালই নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলকে। তামিমও বুঝে যান পাকিস্তানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিটা ভাঙতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন বোলারকে দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হাফিজ সাবলীল খেলেই ১৫০ রানে পৌঁছে যান। সেঞ্চুরির সুবাস পেতে থাকেন আজহার। এই জুটিটাকে ভাঙার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত সাফল্য পান অফ স্পিনার শুভাগত হোম। বলের লাইন বুঝতে ভুল করেছেন আজহার। বোল্ড হয়েছেন। আরেকবার বোঝা গেল, এই উইকেটে ব্যাটসম্যান ভুল না করলে বোলারদের সাফল্য পাবার সুযোগ নেই বলতে গেলে। ১৭৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলে ফেরার সময় আজহারের চোখে মুখে ছিলো সেঞ্চুরির কাছ থেকে ফিরে আসার হতাশা।
প্রথম সেশনের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশের ওই একটিই সাফল্য। পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যে সহজে সুযোগ দেবে না বাংলাদেশের বোলারদের তা খেলা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। হাফিজের সাথে আরো অভিজ্ঞ এবং পাকিস্তানের টেস্ট কিংবদন্তি ইউনিস খান এসে যোগ দিয়েছেন। তাদের ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলিংকে খুব ভালো কিছু মনে হচ্ছিলো না।
২ উইকেটে ৩৩৩ রান নিয়ে পাকিস্তান যায় লাঞ্চে। এক রানের লিড তখন পাকিস্তানের। প্রথম সেশনে তারা তুলেছে ১০৬ রান। আর মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়ে হয়তো ইউনিসের মনসংযোগে চিড় ধরে থাকবে। ৩১ রান নিয়ে বিরতিতে গিয়েছিলেন। ফিরে ২ রান করেই তাইজুলের শিকার হয়েছেন ইউনিস। বলটা মিডল স্টাম্পে পড়ে সামান্য টার্ন করে। ওটাকে পুশ করতে গিয়েও ব্যর্থ ইউনিস। বড় একটি উইকেট পাওয়ার আনন্দে মাতেন তাইজুল। ভাঙ্গে হাফিজের সাথে ৬২ রানের জুটি। বাংলাদেশ শিবিরে সামান্য স্বস্তির হাওয়াও আসে।



মন্তব্য চালু নেই