হাত বাড়ালেই অবৈধ বিদেশি সিগারেট

কে.এম জাহেদ, চট্টগ্রাম থেকে: শুল্ক ফাঁকির ঘটনা বেড়েই চলেছে চট্টগ্রাম কাষ্টমস হাউসে। সিগারেট, প্রসাধনী পণ্যসহ উচ্চ শুল্কের অনেক পণ্যই বাজারে দেখা গেলেও কাস্টমস সুত্রগুলো জানায়, এসবের আমদানী সীমিত পর্যায়ে রয়েছে।

সুত্রমতে, কূটনৈতিক সুবিধা, বৈধভাবে পর্যটন করপোরেশনের অধীনে ও ডিউটি ফ্রি সপের মাধ্যমে বিদেশি সিগারেট আমদানি হয়ে হলেও বাজারে যেসব বিদেশী সিগারেট দেখা যায়, তার বেশিরভাগই মিথ্যা ঘোষনায় চট্টগ্রাম কাষ্টমসের মাধ্যমে, অবৈধ উপায়ে সমুদ্র পথে এবং বিমানবন্দরের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয়। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দেশের বাজারে প্রচুর বিদেশী সিগারেট আসায় রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে এনবিআর। ইতিমধ্যে মিথ্যা ঘোষনায় আনা সিগারেটের বেশ কয়েকটি চালান আটক করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে কাষ্টমস হাউস সতর্ক রয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মুকিতুল হাসান কর্ণফুলীকে জানান, শুধু আমদানী নিষিদ্ধ সিগারেট নয় মিথ্যা ঘোষনায় আনা পণ্যের ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাষ্টমস অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় সতর্ক।

চলতি বছরের ৩ র্মাচ চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার থেকে কাস্টমস হাউসের শুল্ক গোয়েন্দারা ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা মূল্যের আমদানি নিষিদ্ধ সিগারেট উদ্ধার করে। এবং গত ২৫ ফেব্র“য়ারী চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার থেকে উদ্ধারকৃত আমদানি নিষিদ্ধ বেনসন এন্ড হ্যাজেস সিগারেট আমদানি করেছিল ঢাকার আরেকটি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। সুতা আমদানির ঘোষণা দিয়ে উভয় চালান আনা হয়েছিল।

সুত্রমতে, নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার, খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইসহ নগরীর বেশ কয়েকটি স্থান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিদেশি সিগারেট চলে যাচ্ছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার অবৈধ সিগারেট কেনাবেচা হয় এই মার্কেটগুলোতে।

খোলাবাজারে এসব সিগারেট বিক্রি হলেও প্রশাসন নীরব। যুব সমাজের কাছে র্স্মাট সিগারেট নামেই পরিচিত এইসব বিদেশী সিগারেট মুলত সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, লন্ডন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, বিভিন্ন দেশ থেকে আসে। সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে এসব অবৈধ সিগারেটের লাখ লাখ টাকা ব্যবসা হলেও স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে নির্বিকার থাকায় প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

বাজারে ডানহিল, গ্রান্ড-২০০০, ইজি স্পেশাল গোল্ড, মন্ড, ভন ইন্টারন্যাশনাল, উইনস্টোন, ইজি অউরা, ব্ল্যাক, মালবোরো, উলসন ল্যান্ড এম, মডার্ন, ডাবল হ্যাপিনেস সহ বিভিন্ন নামে বিক্রি হওয়া এইসব সিগারেট তরুণ ক্রেতারাই বেশি কিনে থাকে।

সিগারেট নিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত এক বাজার জরিপে দেখা গেছে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ৭ কোটি ২০ লাখ বিদেশ থেকে আসা চোরাই সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। সরকার এসব সিগারেট থেকে আমদানি শুল্ক আদায় করতে পারলে বছরে আরো প্রায় ১১০ কোটি টাকার মতো রাজস্ব পেত।



মন্তব্য চালু নেই