হাজারো কোটি টাকা আদায়ে কেন পিছিয়ে বিটিআরসি?

বিভিন্ন অপারেটরের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা বাকি পড়ে থাকলেও বিটিআরসি তা সহজে আদায় করতে পারছে না। অনেক ক্ষেত্রে অপারেটরগুলোর কাছে এক রকম অসহায় হয়ে পড়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন অপারেটরের কাছে পাওনার পরিমান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৪৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আরও কয়েক হাজার কোটি টাকার বকেয়া হিসাব রয়েছে যেগুলোর কোনো নিস্পত্তি হয়নি।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিপুল এ অর্থ আদায়ে তারা জোরেশোরে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ জন্য উকিল নোটিশসহ মামলা মোকদ্দমা করার প্রস্তুতিও সম্পন্ন করছেন তারা।

গত সপ্তাহে কমিশনের এক বৈঠকে এ বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের অপারেটরের কাছ থেকে টাকা আদায়ে সময় বেঁধে দিয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিটিআরসির সচিব মো. সারওয়ার আলম।

ওই কর্মকর্তা জানান, বকেয়া আদায়ের জন্য বিটিআরসি সোচ্চার রয়েছে। এক্ষেত্রে তারা মূলত পাবলিক ফান্ড রিকভারি অ্যাক্টে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জানা গেছে, বকেয়া অর্থের মধ্যে সবচেয়ে বড় দুই পাওনা রয়েছে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির কাছে। বিটিসিএলের কাছে ১ হাজার ৬৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং টেলিটকের কাছে থ্রিজি স্পেকট্রামের অর্থসহ ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

আর বেসরকারি অপারেটরগুলোর মধ্যে বকেয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যথারীতি আইজিডব্লিউ। এ খাতের বিভিন্ন অপারেটরের কাছে দীর্ঘদিনের পাওনা ৮৯১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ছয়টি অপারেটর সরকারকে রেভিনিউ শেয়ারিং বা লাইসেন্স ফি না দিয়েই ৬৮৮ কোটি টাকা বাকি রেখে লাপাত্তা হয়ে গেছে।

অন্যদিকে আন্ত:সংযোগ এক্সচেঞ্জগুলোর কাছে বকেয়া ৭৪৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ইন্টারন্যাশনল ইন্টারনেট গেটওয়ের কাছে ১১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

এর বাইরে সিটিসেলের কাছে ২৭৪ কোটি ৬৭ লাখ এবং ওয়াইম্যাক্স অপারেটর বাংলালায়নের কাছে ৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা পাবে বিটিআরসি।

তাছাড়া বেসরকারি ল্যান্ডফোন অপারেটরগুলোর কাছে ৩৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা পাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এর বাইরে শতশত ভিএসপি অপারেটর এবং আইএসপি অপারেটরগুলোর কাছেও কোটি কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তবে এগুলোর সুনির্দিষ্ট হিসাব চূড়ান্ত হয়নি।

বিটিআরসি সূত্র জানায়, পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি এ বকেয়া হিসাবে গ্রামীণফোনের তিন হাজার কোটি টাকা ধরা হয়নি।

২০১১ সালে গ্রামীণফোনে অডিট করে ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা পাওনা দাবি করে কমিশন। বিষয়টি আদালতে নিস্পত্তি না হওয়ায় তা হিসাবে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি।

তাছাড়া গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং সিটিসেলের কাছে ভ্যাট হিসেবেও বিটিআরসি কয়েকশ কোটি টাকা দাবি করলে অপারেটরগুলো এ বিষয়ে আবারও উচ্চ আদালতে যায়। এ মামলাটি এখনও অনিস্পন্ন রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই