‘হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে চলতো কমিশন বাণিজ্য’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশ বছর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রাখা হয়েছিল। নানা চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে জনগণের ভোটে আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। আসার পর তাদের লুটপাট দেখে আমরা অবাগ হয়ে যাই। ক্ষমতায় আসার পর দেশ পুনর্গঠনে মননিবেশ করি। এর পর ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে আমাদেরকে দীর্ঘ সাত বছর ক্ষমতার বাইরে রাখা হয়।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রপ্তানি ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাএর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০১১-২০১২ এবং ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মরফুহা সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ার করনেই একটি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হই। তারা গ্যাস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে।আর ক্ষমতায় আসার পরই ‘হাওয়া ভবন’ সৃস্টি করে শুরু হয় কমিশন বাণিজ্য।এই হাওয়া ভবনকে কমিশন না দিয়ে তখন কেই ব্যবসা করতে পারেনি।তখন ব্যবসা বাণিজ্যে আবার স্থবিরতা নেমে আসে।অর্থনৈতিকভাবে দেশ পিছিয়ে যেতে থাকে।’ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ আবার আমাদেরকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় পাঠায়। সাত বছর পর দেশ আবার মূল ধারায় ফিরে আসে।’ সরকারের নানামূখী কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নতুন করে পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা করে দেশকে উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনি। একের পর এক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তাবায়ন করি।যার ফলে দেশ আজ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েছে। তবে আমরা নিম্ন থাকতে চাই না। আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হবো এবং এ লক্ষে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

দেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের একার পক্ষে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।তিনি বলেণ, ‘বেসরকারি খাতকে সুযোগ দেয়ার কথা আমাদের আইনেই রয়েছে।আমরাও তাই মনে করি।’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নতুন নতুন বাজার খুঁজুন। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা সেটা বিশ্লেষণ করে বাজার খুঁজুন। বাজার খুঁজে নিজেদের বের করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু বাজার খোঁজার উদ্যোগটা আপনাদের নিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাটা যদি না হতো, আমাদের রপ্তানির টাকার অংকটা আরও বেশি দেখাতে পারতাম। তারপরও রপ্তানিতে যা আয় হচ্ছে, সেটা বড় কথা।দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করেছি। খাদ্য ক্রয় করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতো। এখন তা হয় না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনজি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কোনো ব্যবসায়ী ঠিক মতো ব্যবসা করতে পারেননি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় আসার পর সার্বিক পরিকল্পনায় ব্যবসাখাতকে এগিয়ে নিতে থাকি।’

তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় থাকতে কেবল স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে নিজেদের জন্য কাজ করেছে। কিন্তু আমরা দেশের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন এদেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে। কিন্তু ১৫ আগস্টে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়। তারপর ২১ বছর বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা ক্ষমতায় এসে রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ শুরু করি। সবখাতের মতো ব্যবসাখাতের উন্নয়নেও কাজ শুরু করি।’



মন্তব্য চালু নেই