“হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক”

শাহাদত হোসাইন স্বাধীন, জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন ঈদের ছুটিতে ১৪ দিন হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে প্রশাসনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত হিসেবে মন্তব্য করেছেন সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের জাহাঙ্গীরনগর শাখার সভাপতি রবিন কর্মকার।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। আমাদেরকে বাধ্য করেই বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীর আছে যাদের বাড়ি বেশ দূরে এবং যেতে অনেক টাকা খরচ হয়। অনেকেই পরীক্ষা শেষে করে বাড়ি থেকে ঘুরে এসেছে এবং তাকে আবার বাধ্য হয়েই বাড়ি যেতে হবে। মানসিক ও আর্থিকভাবে যেটা কষ্টকর। আমরা চাই প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত পুঃন বিবেচনা করবে। আমরা উপাচার্যের সাথে দেখা করে আমাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরব।

জনা যায়, গত বুধবার বিশ^বিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রীষ্মকালীন, রমজান, পবিত্র জুমাতুল বিদা, শব-কদর এবং ঈদ-উল- ফিতর উপলক্ষে ৪১ দিনে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৭ জুন থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম এবং ১১ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে সকল অফিস বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সকল আবাসিক হল বন্ধ থাকবে। তবে টানা ১৪ দিনের হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে সমালোচনার ঝড়। এছড়া গত বছর হল রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কারণ দেখিয়ে হল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল প্রশাসন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ও দাবির মুখে হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে প্রশাসন । পরবর্তীতে হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবেনা এমন আশ্বাস দেয়ার পরও পুনরায় হল বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের জাহাঙ্গীরনগর শাখার সভাপতি রবিন কর্মকার অভিযোগ করেন, গত বছর এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আমরা, উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে সমস্যার কথা বলেছিলাম। পরবর্তী বছর গুলোতে হল বন্ধ করা হবেনা এমন আশ্বাস তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরও কেন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হল তা বুঝতে পারছি না।

জাহাঙ্গীরনগর ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস এ্যাসিয়েসন এর সভাপতি প্রতাপ কোচ বলেন, ক্যাম্পাসে হিন্দু, বৌদ্ধ, খুীষ্টান শিক্ষার্থীা সংখ্যাও অনেক। প্রশাসনের হল খালির সিদ্ধান্তে তাদের সমস্যায় পড়তে হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাই, যেন এ সিন্ধান্ত বাতিল করা হয়।

বিশ^বিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জোবায়ের টিপু বলেন, শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা না বুঝে কি কারণে বা কেন বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরণের সিদ্ধান্ত নেন তা আমদের বোধগম্য নয়। পূর্বেও এমন সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলাম। শিগগিরই উপাচার্যের সাথে দেখা করে এই হঠকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাবো।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দীপান্জন সিদ্ধান্ত কাজল বলেন, গতবছর হল ভ্যাকেন্ট ঘোষণা করলে আমাদের প্রতিবাদের মুখে প্রসাশন পরবর্তী বছর থেকে হল ভ্যাকেন্ট না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। কিন্তু প্রসাশন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করছে। আগামী ৫ জুন মাননীয় ভিসি ম্যামের সাথে দেখা করে আনুষ্টানিভাবে প্রতিবাদ জানাবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এব বছর দীর্ঘদিনের ছুটি। ছুটির শেষে অল্প কয়েকদিন হল বন্ধ থাকবে। আশা করি শিক্ষাথীরা ভোগান্তীতে পড়বে না।



মন্তব্য চালু নেই