হজ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার হুমকি হাবের

হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমানের টিকিট বাবদ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা না দিতে অটল বেসরকারি হজ এজেন্সিদের সংগঠন হাব।

সরকার মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে টিকিটের টাকা জমা দিতে বাধ্য করলে এ বছর হজের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে হজ লাইসেন্স সারেন্ডার করারও হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন হাব সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি সরকার ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য হজকে পূর্ণাঙ্গরূপে ‘ই-হজ’ সিস্টেমে বাস্তবায়নের দৃঢ়তা পোষণ করায় জানুয়ারির শুরু থেকেই অনলাইনে এজেন্সির নিবন্ধনসহ আনুষঙ্গিক চুক্তি সম্পন্নের বিধান করে। এ প্রেক্ষাপটে ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভায় ন্যূনতম হজ প্যাকেজ মূল্য ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা নির্ধারণ করে হজ প্যাকেজ অনুমোদিত হয়। হজ প্যাকেজে হজযাত্রীদের মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়া বাবদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকাও একসঙ্গে সরকারি কোষাগারে জমাদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়ার টাকা জমাদানের নিয়ম বাতিলের দাবি জানিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর হাবের পক্ষ থেকেও হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। ওই দিন হাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়— মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়া সরকারি কোষাগারে জমাদানের এ নিয়মে পুরো হজ ব্যবস্থাপনাতেই বিরূপ প্রভাব পড়বে। হজে যেতে ইচ্ছুকদের অধিকাংশেরই একসঙ্গে এত টাকা জমা দেওয়া সম্ভব হবে না। এ ব্যাপরে প্রধানমন্ত্রীসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়েও আবেদন করে হাব।

হাব সভাপতি বলেন, ‘গত ১৯ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদে আমাদের দাবিটি উত্থাপিত হয় এবং নিবন্ধনের সময় মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়ার ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে বিমান ভাড়ার ২০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমাদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এতেও হজ কার্যক্রমে জটিলতা দেখা দেবে।’

টিকিটের টাকা ধর্ম মন্ত্রণালয় গ্রহণ করলে তা কীভাবে এজেন্টকে ফেরত দেওয়া হবে এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন।

যে সব হজযাত্রী এয়ারলাইন্সের ফ্রি টিকিটে যাবেন বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকিট কী নিয়মে কাটতে হবে তার কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘হাজীদের পছন্দমতো শর্ট প্যাকেজ ও দীর্ঘ প্যাকেজ করা হয় এবং টিকিটে নির্ধারিত যাওয়া-আসার তারিখ অনুযায়ী প্যাকেজের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়। সরকারের হাতে টিকিটের অর্থ থাকলে এ ব্যবস্থাপনা চরমভাবে ব্যর্থ হবে।’

হাব সভাপতি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার হজযাত্রীর ডাটা এন্ট্রি হয়েছে। তবে পেমেন্ট না দেওয়ায় তারা নিবন্ধিত হননি।’

নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সময় ২১ দিন বাড়ানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইব্রাহিম বাহার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, হাবের বিশেষ সাধারণ মুয়াল্লেম ফির সঙ্গে বিমান ভাড়ার আংশিক অর্থ গ্রহণ যুক্তিযুক্ত নয়। টিকিটের টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতার প্রেক্ষাপটে আগের মতো শুধু মুয়াল্লেম ফি জমা নিয়ে নিবন্ধন করার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন হাব নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে হাবের মহাসচিব শেখ আব্দুল্লাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কবির খান জামান, সহ-সভাপতি আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার, অর্থ সচিব মোজাম্মেল হোসেন কামাল, জনসংযোগ সচিব সায়েম মোহাম্মদ হাসান ও সাংস্কৃতিক সচিব পীরজাদা মাওলানা মু’তাসিম বিল্লাহসহ হাবের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই