স্যান্ডউইচের দামে যৌনতা বিক্রি!

গ্রীসে ছয় বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশটির যৌনকর্মীরা খুবই অল্পদামে যৌনতা বিক্রি করছে বলে দাবি করা হয়েছে নতুন এক গবেষণায়।

দেশটির ১৭ হাজার যৌনকর্মীর উপর জরিপ চালিয়ে শুক্রবার এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ব ইউরোপের নারীদের সরিয়ে দেশটির যৌন ব্যবসায় স্থান করে নিয়েছে গ্রীসের নারীরা। ইউরোপের মধ্যে গ্রীসে যৌনতার মূল্য সবচাইতে কম এবং অনেকক্ষেত্রে এ মূল একটি মাত্র স্যান্ডউইচের দাম।

অ্যাথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক গ্রেগরি লাক্সস যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম লন্ডন টাইমসকে জানান, কিছু ক্ষেত্রে নারীরা শুধুমাত্র একটি চিজ পাই কিংবা স্যান্ডউইচের দামে যৌনতা বিক্রি করে ক্ষুধা নিবারনের জন্য। তিন বছরব্যাপী এই গবেষণার নেতৃত্ব দেয়া লাক্সস বলেন, অন্যরা হয়তো কর, বিল প্রদান কিংবা প্রয়োজন অথবা নেশার টাকা সংগ্রহের জন্য এত কম টাকায় যৌনতা বিক্রি করেন।

যখন গ্রীসে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয় তখন নারী যৌনকর্মীদের সাথে ৩০ মিনিট সময় কাটাতে ৫০ ইউরোর প্রয়োজন পড়লেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২.২ ইউরোতে।

লাক্সস বলেন, অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টির আগে যৌন ব্যবসার প্রতি গ্রীসবাসীর কোন প্রবণতা না থাকলেও এখন দেশটির যৌনকর্মীদের শতকরা ৮০ জনই গ্রীসের নাগরিক।

ইন্টারনেটে বিপুল পরিমান যৌনতা সম্পর্কিত কন্টেন্ট থাকার কারণে বিশ্বব্যাপীই কমতে শুরু করেছে যৌন ব্যবসার মূল্য। ইউরোপে প্রতি ঘণ্টা যৌন মিলনের জন্য ১৯১ ইউরো ব্যয় করার প্রয়োজন পড়লেও নাটকীয়ভাবে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮০ ইউরোতে।

গ্রীসে যৌন ব্যবসা অনুমোদিত হলেও দেশটির বেশিরভাগ পতিতালয়েরই নেই অনুমোদন এবং সাড়ে ১৮ হাজার যৌনকর্মীর বেশিরভাগই রাস্তায় দাঁড়িয়ে খদ্দের খোঁজেন।

এর কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে লাক্সস বলেন, নতুন নতুন তরুণীদের এ পেশায় ঢোকার প্রবণতা আবার এখান থেকে বের হয়ে যাওয়া এবং বিপুল সংখ্যক নারীর এ কাজে যুক্ত থাকাই এর মূল কারণ।

গবেষণায় দেখা গেছে বেশিরভাগ গ্রীক যৌনকর্মীই ১৭ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে যৌন পেশায় ঢুকছে।

গত মাসে টাকার জন্য নিজের ১২ বছরের এক মেয়েকে অবসরপ্রাপ্ত এক যাজকের কাছে বিক্রি করে দেন এক মা। ৪৪ বছর বয়সী ওই নারীকে ৩৩ বছরের জেল এবং এক লাখ ইউরো জরিমান করে আদালত। ওই ঘটনার পর গ্রীসের নাগরিকরা ক্ষোভে ফেঁপে পড়ে এবং গণমাধ্যম ওই নারীকে ডাইনী বলে সম্মোধন করে সংবাদ প্রকাশ করে।

লাক্সস বলেন, গত মাসের ওই ঘটনা এবং এ গবেষণা সমাজে সত্যতাকে তুলে ধরেছে।

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সরকারের উচিত উদাসীন না থেকে এ বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া।



মন্তব্য চালু নেই