স্বাস্থ্যবিধির এই সাধারণ নিয়মগুলো মেনে চলছেন কি?

কিছু মানুষের জন্য মৌলিক ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। যারা কাজে ব্যস্ত থাকেন সারাদিন। জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল করেন না তাঁরা। স্বাস্থ্যের চাইতে কাজটাকেই জীবনে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু দায়িত্বভার সঠিক ভাবে পালনের জন্যই ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিন নিজের যত্ন নেয়ার জন্য কিছুটা সময় রাখুন। এই সময়টুকুই আপনাকে অন্যদের কাছে সূক্ষ্ম ইতিবাচক ইঙ্গিত প্রকাশ করবে যার ফলে আপনি নিজে ভালো অনুভব করবেন। কারণ অন্যদের কাছে নিজেকে উপস্থাপনের প্রথম ধাপই হচ্ছে বাহ্যিক রূপ ও আচরণ। আসুন জেনে নেই ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির প্রয়োজনীয় ধাপগুলো সম্পর্কে।

১। প্রতিদিন গোসল করুন
গোসলের মাধ্যমে শরীরের ময়লা, ঘাম ও মড়া চামড়া দূর হয়। হালকা সাবান বা বাথ জেল ব্যবহার করুন। চুলে প্রতিদিন শ্যাম্পু দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে চুল শুষ্ক করে দিতে পারে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার না করাই ভালো। টাফট বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট ডঃ স্টুয়ারট লেভি বলেন, “ঠান্ডার লক্ষ্মণ দেখা দেয়া মাত্রই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করা আমাদের চারপাশের মাইক্রোঅর্গানইজম বা অনুজিবের ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত করে যা শুধু সুপারবাগ রেখে যায়”। সুপারবাগ হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার শক্তিশালী সংস্করণ যা এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী।

২। ভালোমানের সুগন্ধি ব্যবহার করুন
বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করাটা জরুরী। তবে ঘাম রোধী অ্যান্টিপারস্পাইরেন্ট ব্যবহার করবেন না। কারণ এতে রাসায়নিক উপাদান থাকে।

৩। পরিষ্কার পোশাক পরুন
পরিষ্কার পোশাক পরিধান করা অত্যন্ত জরুরী। কোঁচকানো, দাগযুক্ত ও গন্ধযুক্ত কাপড় পরা ঠিক নয়। একই পোশাক কয়েকবার পরা যায় তবে সেটা ময়লাহীন আছে কিনা দেখে নিন।

৪। চুলের যত্ন নিন
প্রতিদিন চুল আঁচড়াতে ভুলবেন না। এর ফলে চুলের গোঁড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও চুল সঠিকভাবে পুষ্টি পায় এবং চুলে জট পাকে না। বাহিরের ধুলাবালি থেকে চুলকে মুক্ত রাখার জন্য বাহিরে যাওয়ার সময় চুল ঢেকে নিতে পারেন। দুই তিন দিন পরপর চুলে শ্যাম্পু করুন। যদি আপনার চুল তৈলাক্ত হয়। তাহলে কন্ডিশনার মাথার তালুতে না লাগানোই ভালো। কারণ এতে চুল আরো বেশি তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে। আপনার চুলের ধরণ বুঝে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার কিনুন।

৫। নখের যত্ন নিন
নিয়মিত নোখ কাটুন এবং পরিষ্কার রাখার জন্য হাত ধোন বা স্ক্রেপার দিয়ে নখ পরিষ্কার করে নিন।

৬। দাঁতের যত্ন নিন
নিয়মিত দুই বেলা দাঁত মাজার পাশাপাশি ফ্লস ব্যবহার করে দাঁত পরিষ্কার করুন। দুই দিন অন্তর মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করুন। কয়েকমাস পর পর ব্রাশ পরিবর্তন করুন। ওড়াল কেয়ার এক্সপার্ট সোনালী বাঁশি পরামর্শ দেন- “শিশু-কিশোর ও বয়স্কদের সকলেরই দিনে একবার জিহবা পরিষ্কার করা প্রয়োজন, ফলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ ও মুখে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ব্যহত হয়”। খাওয়ার পরে মুখে গন্ধ হতে পারে। এই গন্ধ দূর করার জন্য চিনি মুক্ত চুইং গাম চাবান। এতে লালার উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ও মুখের শুষ্কতা দূর হয়।

৭। দিনে দুইবার মুখ ধুয়ে নিন
প্রতিদিন সকালে ও রাতে মুখ ধুয়ে নিন। প্রথমে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলে মুখের ছিদ্র গুলো খুলবে এবং তারপর হালকা সাবান বা ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। শেষে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিলে ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তোয়ালে দিয়ে মুখটি মুছে নিয়ে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন, এতে মুখের ত্বক নরম থাকবে।

টিপস :
· কনুই, হাঁটু, হাত ও পায়ে লোশন লাগান।
· আপনার ব্যাগে টিস্যু বা রুমাল ও চিরুনি রাখুন।
· কিছু নেইল পলিশ ও রিমুভার নখের ক্ষতি করতে পারে।
· ব্যবহৃত চিরুনিটি কয়েকদিন পর পর ধুয়ে ফেলুন।
· দূরে কোথাও যাওয়ার সময় টুথ ব্রাশ, ছোট আয়না ও হ্যান্ড সেনিটাইজার নিন।
· নিয়মিত শেভ করুন ও দাড়ি ছাঁটুন।
· নতুন কারো সাথে পরিচিত হলেই হেঁসে হ্যান্ড শেক করুন ও কথা বলুন।
· স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও ভালো আচরণ আপনার চারপাশে ইতিবাচক অনুরণন সৃষ্টি করবে।



মন্তব্য চালু নেই