নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তৃতাকালে

স্বল্পোন্নত দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট সহায়তা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ে আয়োজিত ‘পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে স্বল্পোন্নত দেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক এক তাত্ত্বিক আলোচনা সভায় মুখ্য বক্তা হিসেবে বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ও নরওয়ে কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ.কে আব্দুল মোমেন এবং নরওয়ের স্থায়ী প্রতিনিধি গেইর পেডেরসেন।

সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বেনিন-এর স্থায়ী প্রতিনিধি ও স্বল্পোন্নত দেশসমূহের চেয়ারম্যান জাঁ-ফ্রান্সিস জিনসু, জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব ও স্বল্পোন্নত ল্যান্ডলক এবং স্মল আইল্যান্ড ডেভেলপিং স্টেটের হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জ্ঞান চন্দ্র আচার্য এবং জাতিসংঘ সোস্যাল ইকোনমিক এফেয়ার্সের বিশেষজ্ঞ উইলেম ভ্যান ডের গিস্ট।নিউইয়র্কের জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে মঙ্গলবার এখানে প্রাপ্ত এক বার্তায় একথা বলা হয়।

মুখ্য বক্তার আলোচনায় বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন। স্বনির্ভরতার পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, বৈদেশিক সহায়তার ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা হ্রাস পেয়ে বর্তমানে আমাদের জাতীয় আয়ের মাত্র ২% বৈদেশিক সহায়তার সমান। তবে তিনি বলেন, অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় অনেক খারাপ। অর্থমন্ত্রী সবাইকে মনে করিয়ে দেন, এ সব দেশের জাতীয় বাজেটের সিংহভাগ বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। তিনি উন্নত দেশগুলোকে আহ্বান জানান যে তাদের বৈদেশিক সহায়তার অন্তত ৫০ শতাংশ যেন স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে বরাদ্দ করা হয়।

বিশ্ব বাণিজ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পিছিয়ে থাকার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোকে তাদের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। যাতে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো সহজে ও বিনা শুল্কে রফতানি করতে পারে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রযুক্তির ঘাটতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সরকার জাতিসংঘের আওতায় প্রযুক্তি ও গবেষণা কেন্দ্রের আঞ্চলিক কেন্দ্র বাংলাদেশে স্থাপনে আগ্রহী। জলবায়ু পরিবর্তনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তা সমাধানে অর্থ মন্ত্রী উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে জাতিসংঘে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে যে আলোচনা চলছে, সেখানে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে যথার্থ গুরুত্ব দিতে হবে, এবং তাদের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা বরাদ্দের ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক।

সভায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেই বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রয়োজন সহায়তার গুণগত মান নিশ্চিত করা। বিশ্বের ধনী-গরীব দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে- যাতে বৈদেশিক সহায়তা থেকে স্বল্পোন্নত দেশগুলো প্রকৃত অর্থেই উপকৃত হয়।



মন্তব্য চালু নেই